বাসচাপায় রাজীব-দিয়া নিহতের মামলার রায় কাল

  © ফাইল ফটো

বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের মামলার রায় আগামীকাল রোববার (১ ডিসেম্বর) ঘোষণা করা হবে। দুর্ঘটনার এক বছর চার মাস এক দিন পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে। গত ১৪ নভেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ রায় ঘোষণার এ দিন ধার্য করেন।

গত বছরের ২৯ জুলাই বাসচাপায় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মীম (১৬) নিহত হন। বেপরোয়া বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে রাজধানীসহ দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেন। সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে উৎসাহিত করেন। একই সঙ্গে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধেও অবস্থান নেন।

আদালত সূত্র জানায়, গত বছরের ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর হোটেল র্যা ডিসনের বিপরীত পাশের জিল্লুর রহমান উড়ালসড়কের ঢালের সামনের রাস্তার ওপর জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস রেষারেষিতে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত ও নয়জন আহত হয়। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীমের বাবা মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলাটি করেন।

তদন্ত শেষে দুই মাস পর ৬ সেপ্টেম্বর ছয় জনের বিরুদ্ধে ডিবির পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আদালতে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। চার্জশিটে বাসের চালক ও হেলপারদের সহযোগিতায় পাল্লাপাল্লি ও রেষারেষি করে বেশি যাত্রী, বেশি ভাড়া পাওয়ার লোভে দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে বাস চালায় বলে উল্লেখ করা হয়। তবে চার্জশিটের কোথাও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ দেয়ার মূল হোতাদের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

গত বছরের ২৫ অক্টোবর এ মামলায় জাবালে নূরের মালিকসহ ওই ছয় আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন আদালত। এরপর গত বছরের ১ নভেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং দুই চালকের দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ। এদের মধ্যে শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন বাসটির চাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যায়।

নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীমের মা রোকসানা বেগম বলেন, আমার মেয়ে যদি রাস্তা পার হওয়ার সময় এক্সিডেন্ট (দুর্ঘটনা) হতো, তাহলেও মনে এতটা দুঃখ থাকত না। মনে করতাম, হয়ত আমার মেয়েরই ভুল ছিল। হয় তো মেয়েই দেখে রাস্তা পার হতে পারেনি। কিন্তু আমার মেয়ে গাড়িতে উঠার জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। যেখান থেকে যাত্রীরা গাড়িতে উঠে, সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। ড্রাইভারটা যদি একটু সাবধানে গাড়ি চালাত, তাহলে আমার মেয়ে মারা যেত না। আদালতের কাছে আমরা ন্যায়বিচার প্রার্থনা করি।

সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি সর্বাধিক গুরুত্বসহকারে পরিচালনা করা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ সক্ষম হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ মামলার আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে প্রত্যাশা করছি।


সর্বশেষ সংবাদ