সাফল্য আর অর্জনের ৪০ বছরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

  © ফাইল ফটো

দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৭৯ সালে ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার মধ্যবর্তী শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুর নামক স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করে আসছে।

একুশ শতকের উপযোগী বিশ্বমানের গ্রাজুয়েট ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ভিশন নিয়ে এগিয়ে চলেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ। নানা চাড়াই উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে ৪১ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারী এই বিশ্ববিদ্যালয়টি।

আগামীকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ।

কর্মসূচীর মধ্যে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন, শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়ানো, আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্য ছিল এটি একটি আন্তর্জাতিকমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপলাভ করা। কিন্তু পরবর্তীতে নানা প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতার কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে বর্তমান প্রশাসন এ লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করেত নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮টি অনুষদের অধীন ৩৪টি বিভাগ, একটি ইনস্টিটিউট এবং ১টি ল্যাবরেটারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালিত হচ্ছে। এর অধীনে রয়েছে ১৪ হাজার ৪৫৪ জন শিক্ষার্থী, ৪০০ জন শিক্ষক, ৪৬৪ জন কর্মকর্তা, ৩৫১ জন সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারী।

এছাড়া এমফিল কোর্সে ২৮৫ জন এবং পিএইচডি প্রোগ্রামে ৩৫৭ জন শিক্ষার্থী বর্তমানে গবেষণাকর্মে নিযুক্ত রয়েছেন। এ পর্যন্ত ৬২১ জন শিক্ষার্থীকে এমফিল ডিগ্রি এবং ৪২১ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখা সূত্রে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট ১২ জন উপাচার্য দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক ড. এ এন এ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী। এছাড়া বর্তমান উপাচার্যের দায়িত্বে দায়িত্বরত আছেন অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘ এই ৪০ বছরের পথ চলায় নানা চড়াই উৎরাই পার করে কালের অবিচল সাক্ষী হয়ে সগৌরবে উচ্চশিক্ষার প্রদীপ্ত মশাল নিয়ে ছুটে চলেছে দেশের প্রতিটি প্রান্তরে। ৩৯ বছরের এই পথ চলার মাঝে রয়েছে অনেক প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি, গৌরব আর খ্যাতি।

এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অনেকে। ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের ছোঁয়া দৃশ্যমান হলেও বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনায় উচ্চশিক্ষায় এখনো আমরা পিছিয়ে। বিদেশি স্কলার, জার্নাল, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম আরও বাড়ানো দরকার।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পূর্বের তুলনায় প্রিয় ইবি অনেকদূর এগিয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও প্রসার ছাড়াও ইবি আজ দেশ ও জাতির উন্নয়নে ঐতিহ্যের অধিকারী।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারি বলেন, ‘দীর্ঘ ৪০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টি অর্জন করেছে অনেক গৌরব আর খ্যাতি। আমি মনে করি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’


সর্বশেষ সংবাদ