রাবিতে ছাত্র নির্যাতনের কথা জানেন না হল প্রভোস্ট

রাবিতে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার শিক্ষার্থী সোহরাব ও শামসুজ্জোহা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জুলকারনাইন
রাবিতে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার শিক্ষার্থী সোহরাব ও শামসুজ্জোহা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জুলকারনাইন  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগের দুই নেতা। মারধরে সোহরাবের বাম হাতের দুই জায়গায় ভেঙে গেছে। শুক্রবার  রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের তৃতীয় ব্লকে এ  ঘটনা ঘটে।

আহত সোহরাব মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের  ফাইন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষে শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আট নাম্বার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মারধরে অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলেন, আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ। এরা দুইজনেই জোহা হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বে রয়েছেন এবং রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ কর্মী আসিফ লাকের নেতৃত্বে সোহরাব ফ্যাইনান্স বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হলের তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নাম্বার কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে সোহরাবকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ।

এক পর্যায়ে তারা দুজন মিলে সোহরাবকে রড দিয়ে মারধর শুরু করে। তারা সোহরাবের মাথা ও হাতে পিটাতে থাকে। এক পর্যায়ে সোহরাব রক্তাক্ত হলে তারা মারধর বন্ধ করে। পরে সোহরাবের বন্ধুরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রামেকে ভর্তি করে।

হাসপাতালে সোহরাবের সঙ্গে থাকা তার এক সহপাঠী জানান, সোহরাবের বাম হাতের কনুইয়ের ওপর ও নিচে দুই জায়গায় ভেঙে গেছে। ডাক্তার জানিয়েছে মাথার তিন জায়গায় সেলাই দেয়া লাগতে পারে। তার মাথা থেকে প্রচন্ড পরিমাণে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। আপাতত এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে তার সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোহরাবের এক সহপাঠী জানান, গত কয়েকদিন থেকেই আসিক লাক সোহরাব নানানভাবে অত্যাচার করে আসছে। দুইদিন আগেও  আসিফ লাক সোহরাবকে ডেকে নিয়ে চড় থাপ্পর মেরেছিল।

মারধরের ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত আসিফ ও নাহিদের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। তাদের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধনের করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, ঘটনা রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ঘটলেও সকাল ৯ পর্যন্ত এ ঘটনার কোন খোঁজ পাননি শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জুলকারনাইন। তিনি জানান, অনেক রাতে ঘটনা হওয়ায় জানতেন না তিনি। এই প্রতিবেদকের মাধ্যমে তা জানতে পেরেছেন। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘটনার বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান জানান, তিনি বর্তমানে ঢাকা আছেন। ফেসবুক থেকে ঘটনা জেনেছেন। অনেকে রাতে যোগাযোগ করলেও তিনি তখন ঘুমে ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়াকে একাধিক বার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায় নি।