জাবি হল খুলে দিতে আল্টিমেটাম, আন্দোলন স্থগিত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ, বিচার এবং আগামী ২১ নভেম্বরের মধ্যে হল খুলে দেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানা হলে আগামী ২২ নভেম্বর রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আল্টিমেটাম চলাকালে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা দাবি করেন ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিভিতে প্রচারিত ছবি ও ভিডিও এডিট করে নোংরা ও কুরুচিপূর্ণভাবে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে।’ এসময় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন ধরনের নীতি-নির্ধারনী সিদ্ধান্ত নিতে প্রতিহত করা হবে। গত ৫ নভেম্বর শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে উপাচার্যের মদদে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় রাষ্ট্রীয় আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

এদিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুইজন আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে। উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নজির আমিন জয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি মাহথির মোহাম্মদসহ পাচঁজন অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা অফিসার সুদিপ্ত শাহীন।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে আন্দালনের অন্যতম সংগঠক ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন,‘এখন যে আন্দোলন হচ্ছে তা বিশ্ববিদ্যালয় রক্ষার আন্দোলন। প্রশাসন ভয় পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলে, আবারো সবাই আন্দোলনে আসবে। সরকারের উচিত তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত চালু করে তা সম্পন্ন করার মধ্যদিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে সচল করা।’

প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে প্রায় দুই মাস যাবৎ আন্দোলন করছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের একাংশ। গত ৫ নভেম্বর উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ করায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে। এ হামলায় শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ ৩৫ জন আহত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

 


সর্বশেষ সংবাদ