পাচঁ মাস উপাচার্যবিহীন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য নেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুধু উপাচার্যই নয় উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্টারসহ ডিন পদগুলোও শূন্য হয়ে পড়েছে । ফলে ভেঙ্গে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা। অনিশ্চিত প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন। ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে সেশন জটের আশঙ্কা। শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে । ইতিমধ্যে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের দাবীতে মানববন্ধনও করেছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সংকটের কোন সমাধান এখনো হয়নি।

এর আগে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক( সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষাও সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।কেননা ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য যে অর্থ লাগে তাতে সই করার মত ক্ষমতাধারী কোন ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই।

শিক্ষার্থীরা ক্ষোভপ্রকাশ করে জানিয়েছেন, উপাচার্য নিয়োগের দায়িত্ব থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাজটা কী? একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচমাস উপাচার্য নেই, অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ ব্যাপারে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ইউজিসি কি এসব বিষয় লক্ষ্য করে না?

বুধবারে সরেজমিনে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থীদের ক্লাস -পরীক্ষায় অংশ নিতে। জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম মাহবুব হোসেন থাকতে অনুমতি নেওয়া বিভাগগুলোতে সেমিস্টার ও ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু নতুন করে কোন পরীক্ষার রুটিন দেওয়া হচ্ছে না।

মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল ইসলাম তমাল বলেন, একটি পরিবার যেমন পিতা-মাতা ছাড়া ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা আজ ছন্নছাড়া পরিবারের মতই। উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় অন্যান্য নিয়োগ গুলো হচ্ছে না। সিন্ডিকেট, অ্যাকাডেমিক, অর্থ কমিটির কোন মিটিং হচ্ছে না। নতুন করে কোন শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। ফলে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক সংকটের কারণে ঠিকমত ক্লাস -পরীক্ষা হচ্ছে না।

এদিকে উপাচার্য না থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চেইন অফ কমান্ড। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে দেখা দিয়েছে গাছাড়া ভাব। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে শুরু করেছেন কাদাছুড়াছুড়ি। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ছুটিতে যাবার আগে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাহী প্রকৌশলিক মুরশিদ আবেদিন নানা অভিযোগে শোকজ করেছেন। যদিও তিনি দাবী করেছে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এটা এক্তিয়ার বহ্নিভূত কাজ করেছেন।

শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফ হোসেন বলেন, উপাচার্য না থাকায় ইতিমধ্যে আমাদের এ মাসের বেতন ভাতা বন্ধ হতে চলেছে । নতুন করে পরীক্ষার সূচি না দেওয়া শিক্ষার্থীরা সেশন জটের আশঙ্কায় আছে। একথায় স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আমাদের শিক্ষকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের ক্লাস চালিয়ে নেওয়ার। আশা করছি দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে।

 


সর্বশেষ সংবাদ