উপাচার্যের বিরুদ্ধে পদযাত্রা ও প্রতিবাদ সমাবেশ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তার পদত্যাগ দাবিতে পদযাত্রা ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’র ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

ভর্তি পরীক্ষা, শারদীয় ও অন্যান্য ছুটিসহ টানা ২৫দিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাভাবিক প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায়। এদিনই দুপুরে উপাচার্যের প্রতি বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে একটি পদযাত্রা বের করে। পদযাত্রাটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহ প্রদিক্ষণ পূর্বক নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মধ্যে দিয় শেষ হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর এর অন্যতম মুখপাত্র ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ইতিমধ্যেই আমাদের কাছে অবাঞ্ছিত। আমরা উপাচার্যের অপসারণ দাবি করে আচার্যকে চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলছি আমাদের চিঠির পর আচার্য এখনো পর্যন্ত কোন উত্তর দেননি। বরং আমাদের চিঠির বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস থেকে প্রতিউত্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস নিয়মিতভাবে তার যা কাজ নয় সেটা করে যাচ্ছে, আমরা তাদের এই ব্যাখার উত্তর দিবো। উপাচার্যকে রক্ষার জন্য নতুন করে একটি সংগঠন গড়ে তোলা হচ্ছে। এই সংগঠন করার উদ্দেশ্য হলো তারা যে অন্যায় করছে সেগুলোকে ঢেকে দেওয়া। এরা সবাই উপাচার্যপন্থী এবং উপাচার্যপন্থী হওয়ার কারণেই তার দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারকে সমর্থন দেবে।’

এছাড়াও তিনি আগামীকাল দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল, ১৭ অক্টোবর সংহতি সমাবেশ এবং ১৯ অক্টোবর মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রতিবাদ সমাবেশে ঘোষণা দেন।

সমাবেশে ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘উপাচার্য ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভারাক্রান্ত করে তুলছেন। এই ভারপ্রাপ্ত করে রাখার কারণ হলো স্বৈরাচারী কায়দায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা। উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম শুরু থেকে অতীতের সকল ইতিহাস ভঙ্গ করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। ২০১৭ সালে শিক্ষার্থীদের নামে মামলা ও গ্রেফতার করে তিনি সেই দৃষ্টান্ত রেখেছেন। জনগণের অর্থে পরিচালিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতিবাজ উপাচার্য আর এক মুহূর্তের জন্য থাকতে পারেন না। রাষ্ট্রকে বলতে চাই এই দুর্নীতিবাজ উপাচার্যকে অপসারণ করুন অন্যথা আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে এবং উপাচার্যের অপসারণ নিশ্চিত করা হবে।’

ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমানের সঞ্চালনায় ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকে জানে উপাচার্যের স্বামী ও পুত্রের মধ্যস্থতায় উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা লেনদেন হয়েছে। এ বিষয়টি ছাত্রলীগের একাধিক নেতা স্বীকারও করেছে। সালামির নামে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে। প্রকাশ্যে প্রমাণিত দুর্নীতিবাজ উপাচার্যকে অপসারণ করতে হবে। এজন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানায়, এরকম দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের হাত থেকে জাহাঙ্গীরনগরকে রক্ষা করুন।’


সর্বশেষ সংবাদ