ফের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ জাবি শিক্ষার্থীদের (ভিডিও)
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ০২:৪২ PM , আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ০২:৪২ PM
বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি ও দেশ বিরোধী চুক্তির প্রতিবাদে ২য় দিনের মতো বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচী পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পাঠাগার চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহীদ মিনার, কলা ভবন ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রবেশ করে। এসময় বিক্ষুদ্ধরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন, সরকার বিরোধী স্লোগান ও বক্তৃতা করেন। পরবর্তীতে বেলা ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হলে শিক্ষার্থীরা জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। এরপরে বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের ভিতরে প্রবেশ করে নতুন কলা ভবনে এসে শেষ হয়।
শিক্ষার্থীরা আজকেও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে ‘গো ব্যাক ইন্ডিয়া’, ‘আমার ভাই খুন কেনো, শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘পানি-বন্দর-নদীর দেশ, জবাব দেবে বাংলাদেশ’, ‘দেশ বিরোধী চূক্তি, মানি না, মানবো না’, ‘শহীদ আবরার দিচ্ছে ডাক, ভারতীয় আগ্রাসন নিপাত যাক’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
সাধারন ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদ জাবি শাখার যুগ্ম আহŸায়ক জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন,‘আবরার শহীদ হয়েছে কিন্তু আমরাও কেউ না কেউ শহীদ হতে পারতাম। শুধু দেশ প্রেমের কারনে আমার ভাই নির্মম ভাবে শহীদ হয়েছে। দেশের মায়া সকলের থাকা দরকার। দেশকে ভালোবাসার কারনে হয়তো সকলকে আবরারে মত জীবন দিতে হতে পারে। আমাদের দেশ নিয়ে আজকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আজকে আমাদের সকলকে শপথ নিতে হবে যে এই দেশের জন্য যদি জীবন দিতে হয় আমরা ছাত্র সমাজ তার জন্য প্রস্তুত আছি। কোন অপশক্তি আমাদের এই দেশকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না। আবরার ফাহাদের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।’
বাংলাদেশ সাধারন ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদ জাবি শাখার আহŸায়ক শাকিল-উজজ্জামন বলেন,‘ সরকার দেশের সার্থকে বিসজ্জন দিয়ে ভারতকে পানি, বন্দর, গ্যাস দিয়ে দেয়। আর যখনই এইদেশের মানুষ, সচেতন শিক্ষার্থীরা তাদের এই অপকর্মের বিরোধীতা করে তখনই তাদের উপর হামলা করা হয়। তেমনি বুয়েটের আবরার যখন তাদের এই কাজের সমালোচনা করলো তখনই তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়। এখন পর্যন্ত যারা এই হত্যার সাথে জড়িত তাদেরকে এখনো কোন বিচারের আওতায় আনা হয় নাই। হত্যার সাথে জড়িত সবাইকে এখনো আটক করা হয় নাই। আমরা বলতে চাই সন্ত্রাসীরা দিনে দিনে গড়ে উঠেনাই। সরকারের ছত্রছায়ায় তারা আজকে সন্ত্রাস হয়ে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এর জন্য দায়ী। আমরা বলতে চাই যারা এই হত্যার সাথে জাড়িত তাদেরকে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আবরাররে হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ রাজপথ ছেড়ে যাবো না।’
আইন ও বিচার বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী খান মুনতাসির আরমান বলেন,‘আবরার অনেক মেধাবী ছিলো সে অনেক জায়গাই পড়ার সুযোগ পেয়েছিলো কিন্তু সে বুয়েটে ভর্তি হয়েছিলো। কিন্তু তাকে একটি ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস এর কারণে ছাত্রলীগের হতে নির্মম ভাবে প্রান দিতে হলো। আবরার খুনীদের বলেছিলো আমাকে তোমরা আমাকে মেরোনা আমার কোন দোষ নেই, আমি কোন অপরাধ করিনি । কিন্তু তারা তিন দফায় তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে মেরেছে। ২২ জন খুনী এ হত্যাকান্ডে জড়িত ছিলো কিন্তু মাত্র ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে সকলকে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা হবে।’
জড়িতদের দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে অতিদ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে মার্কেটিং বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন,‘আমার ভাই আবরারের খুনীরা কি করে খুন করার পর নিশ্চিন্ত মনে ক্যান্টিনে যেতে পারে, খেলা দেখতে পারে তা দেখে অবাক হয়ে যায়। এদেশে আবরারই প্রথম ক্যাম্পাসে খুন হয়নি। এর আগে আমাদের জাবিতেও জোবায়ের ভাইকে হত্যা করেছে তারা। প্রশাসন প্রথমে তা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলো কিন্তু পারেনি। আবরারের খুনীদের বিচার করার জন্য আমি মিডিয়া ও প্রশাসন মারফত প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে অতিদ্রুত বিচার কাজ সমাপ্ত করে খনীদের শাস্তি নিশ্চিত করান না হলে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ দুর্বার আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।’