রাবির নিয়োগ বাণিজ্য: দুদক ও ইউজিসিকে তদন্তের দাবি আন্দোলনকারীদের

  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনায় দুদক ও ইউজিসিকে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পদযাত্রা কর্মসূচি পরবর্তী সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ব্যানারে নিয়োগ বাণিজ্যের প্রতিবাদে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়।

এসময় আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পদযাত্রা শুরু করে প্রশাসন ভবনের সামনে ঘুরে জোহা চত্তরে গিয়ে অবস্থান নেন। সেখানে শহীদ ড. শামসুজ্জোহার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন তারা। নীরবতা পালন শেষে সেখানে বসে প্রতিবাদ জানান আন্দোলনকারীরা। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশন সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ রাবি শাখার আহবায়ক মাসুদ মোন্নাফ, ছাত্র ফেডারেশন এর সভাপতি রাশেদ রিমন, রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহবায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর।

পদযাত্রায় আন্দোলনকারীরা, 'জোহা স্যারের মাটিতে ভারত তোষণ চলবে না, এসো ভাই এসো বোন গড়ে তুলি আন্দোলন, ছাত্র-শিক্ষক জনতা গড়ে তোল একতা, চিন-রাশিয়ার দালালেরা হুশিয়ার সাবধান, ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান, উপরে আল্লাহ নিচে আমি কত দিতে রাজি তুমি, দুর্নীতিবাজ প্রো-ভিসি পদত্যাগ করো করতে হবে' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। 

সমাবেশে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক মোন্নাফ বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা  যখন উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে তখনি শহীদ জোহা স্যারের আদর্শের অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয় দুর্নীতিতে ভারাক্রান্ত, রোগাক্রান্ত। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাচাতে সবাইকে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে। সিনেট ভবনের মতো জায়গা বসে উপাচার্য 'জয় হিন্দ' স্লোগান দিয়ে  বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবমাননা করেছেন। জোহা স্যারের মাটিতে দুর্নীতিবাজ ও দালালের স্থান হবে। এসময় নিয়োগ সংক্রান্ত  যেসব ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে সেসবের তদন্তের পাশাপাশি বর্তমান উপাচার্যের শুরু থেকে যত নিয়োগ হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে এসব তদন্তের অনুরোধ জানান তিনি।

ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি রাশেদ রিমন বলেন, আমদের ভাবতেও অবাক লাগে জোহা স্যারের মাটিতে একজন শিক্ষক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। আমরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলাম, প্রশাসন আমাদের বলেছিল তোমরা আসো মিটিং করে সকল সমস্যার সমাধান হবে। তারা তদন্ত কমিটি করে যে ব্যাক্তি দায়ী থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু দিন যাচ্ছে কোন প্রকার তদন্ত কমিটি গঠিত হয় নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপব্যাখ্যা দিয়ে কালক্ষেপণ করার চেষ্টা করছে। কোন কালক্ষেপণ আর অপব্যাখ্যা চলবে না। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করা যাবে না। দুর্নীতিবাজদের সরিয়ে দিন। নইলে সারাদেশে ছাত্র জনতাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

উপাচার্য জয় হিন্দ স্লোগানের বিষয়ে তিনি বলেন, ''একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তিনি কেন অন্য রাষ্ট্রের অখন্ডতার স্লোগান দিবেন? যদি 'জয় বাংলা' হয় তাহলে 'জয় হিন্দ' কীভাবে হয়? বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আপনি একই মনে বাংলাদেশকেও লালন করবেন আবার ভারতকেও লালন করবেন। বাংলার মাটিতে এসব ভণ্ডামি চলবে না। বাংলার মাটিতে থাকতে হলে আপনার বুকের ভিতর শুধু বাংলাদেশকেই ধারণ করতে হবে। আমরা যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের পবিত্রতায় বিশ্বাস করি আমরা সকল ভণ্ডামির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো।''

পরে শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে থেকে মশাল মিছিল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

 


সর্বশেষ সংবাদ