উপাচার্য শুন্য চারমাস

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনিশ্চিত

  © ফাইল ফটো

গত চারমাস ধরে উপাচার্য নেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি)। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল, অর্থ কমিটি ও সিন্ডিকেটের সভাও হচ্ছে না। চলতি বছরের ২৫ জুন থেকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহবুব হাসান। ৭ অক্টোবর শেষ হচ্ছে তার চার বছরের মেয়াদ। রেজিস্ট্রারের পদও শূন্য। ফলে আগামী ১৮ ও ১৯ অক্টোবর পূর্বনির্ধারিত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী ভিসি অধ্যাপক ড. এস এম ইমামুল হক চলতি বছরের ২৬ মার্চ ববির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কটূক্তি করলে তার অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে ওই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ অংশ নেয়। তখন অধ্যাপক ড. ইমামুল হককে তার মেয়াদকালীন পর্যন্ত, অর্থাৎ ২৬ মে পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়। ২৭ মে তার মেয়াদ শেষ হয়। এ অবস্থায় প্রায় এক মাস উপাচার্যের পদ শূন্য থাকার পর ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মাহবুব হাসানকে ২৫ জুন থেকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা বলেছেন, ববির ট্রেজারার ড. এ কে এম মাহবুব হাসান চলতি বছরের ২৫ জুন উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পাওয়ার পর একটি মহলের প্ররোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে গিয়ে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

ববি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক শীর্ষ নেতা অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বক্ষেত্রে স্থবিরতা বিরাজ করছে। বিদায়ী ভিসির ঘনিষ্ঠদের শায়েস্তা করতে গিয়ে রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি এমন প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন 'চেইন অব কমান্ড' নেই। রুটিন ভিসির ব্যর্থতার কারণেই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নামে দেয়ালে দেয়ালে নোংরা কথা লেখা হয়েছে।

ববি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জাফর মিয়া বলেন, পূর্ণ দায়িত্বের ভিসি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কমিটির সভা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কর্মকাণ্ডে গতি ফেরাতে পূর্ণ পদের ভিসি প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, ভিসি নেই। ট্রেজারারের মেয়াদও শেষ হচ্ছে ৭ অক্টোবর। রেজিস্ট্রার নেই। এ অবস্থায় ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস বলেন, গত জুন মাস থেকে ববি অভিভাবকহীন। ওই সময় থেকে সিন্ডিকেটের সভা হয় না।

সার্বিক বিষয়ে ববির রুটিন ভিসি অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহবুব হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমের কোনো স্থবিরতা নেই। নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা হচ্ছে। সবকিছু স্বাভাবিক গতিতে চলছে। বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো অভিযোগই সত্য নয়। তিনি যা করেছেন, তা নিয়ম মেনেই করেছেন। ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে স্বীকার করে অধ্যাপক মাহবুব বলেন, বিষয়টি সংশ্নিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলে অবহিত করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ