জাবি উপাচার্যকে কালো পতাকা প্রদর্শন আন্দোলনকারীদের

  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের জন্য একনেক কর্তৃক অনুমোদিত ১৪৪৫ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের দায়ে অভিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে 'অবাঞ্ছিত' ঘোষণা করে কালো পতাকা প্রদর্শন করেছে 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর'র ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচি পালিত হয় ।

এসময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র ও ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার বলেন, 'আমাদের দাবি ছিল, দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্ত। কিন্তু উপাচার্য আমাদের দাবি মানেন নাই। পরবর্তীতে যেসব ছাত্র নেতারা প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন তারা স্বীকার করার পরেও উপাচার্য অস্বীকার করেন। ছাত্রলীগ নেতাদের অডিও ফাঁসের মধ্যে প্রমাণিত হয় উপাচার্যসহ তার স্বামী ও ছেলে কমিশন কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত। আমরা এই দুর্নীতিবাজ উপাচার্যকে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে সকল ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি এবং ১ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছি। আমরা মনে করি, এই ধরনের কোনো দুর্নীতিবাজ উপাচার্য আর এক মুহূর্তের জন্যও পদে থাকতে পারেন না।'

এছাড়া 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র ও জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন,' আমাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আগামীকাল সোমবার দুপুর ১টায় সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে আবারও উপাচার্যকে কালো পতাকা প্রদর্শন করা হবে'।

কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল রানা, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভুঁইয়া, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদার, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন, অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার, অধ্যাপক তারেক রেজা প্রমুখ।

এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার নেতা কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর তিন দফা দাবির প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আলোচনায় প্রশাসন দুটি দাবি মেনে নিলেও বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যাপারে আইনজ্ঞের পরামর্শের জন্য তিন কার্যদিবস সময় নেয়।

কিন্তু পূর্বনির্ধারিত ১৮ সেপ্টেম্বরের আলোচনায় প্রশাসন বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিটি মেনে নেয়নি। আলোচনা সভা ফলপ্রসূ না হওয়ায় উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে তাৎক্ষনিক সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে উপাচার্য তার অবস্থান মিডিয়ার সামনে তুলে ধরে। তিনি বলেন আইনজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বপদে বহাল থাকা অবস্থায় তিনি নিজের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে অপারগ।


সর্বশেষ সংবাদ