ছাত্রলীগের অসংলগ্ন আচরণ, বিব্রত জাবি উপাচার্য

  © ফাইল ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে মতবিনিময় সভায় শাখা ছাত্রলীগের কয়েক নেতার ঔদ্ধত্য ও অসংলগ্ন আচরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বিব্রত ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

বুধবার বিকাল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প বিষয়ে ছাত্র-শিক্ষক মত বিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রশাসন। সভায় সম্প্রতি একনেকে পাশ হওয়া ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে মুক্ত আলোচনা হয়। এতে অংশ নেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সভায় আলোচনার এক পর্যায়ে নগর অঞ্চল ও পরিকল্পনা বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য চলাকালে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে হট্টগোল করতে থাকেন জাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফ্ফান হোসেন আপন, সাংগঠনিক সম্পাদক তারেক হাসান ও সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক কানন সরকারসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।

তারা রনিকে ‘জুনিয়র, এই ছেলে এত কথা বলে কেন?’ ইত্যাদি বলে উচ্চবাচ্য ও কটুক্তি করতে থাকেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান ও  শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তারা সবাই জুয়েল রানার অনুসারী।

এই পরিস্থিতিতে উপাচার্য বিব্রত হয়েছেন উল্লেখ করে উপস্থিত সকলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। উপাচার্য পরিস্থিতি শান্ত করে বলেন, ‘আমি এখানে উপস্থিত থাকতে তোমরা (ছাত্রলীগ নেতারা) কারো কথা থামিয়ে দিতে পারো না। যদি তার ভুল হয় বা মাত্রাতিরিক্ত কিছু করে তবে আমি নিজেই তাকে বসিয়ে দিবো। এখানে তো সবাইকে কথা বলার জন্যই ডেকেছি।’

অন্যদিকে, সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমানের বক্তব্য চলাকালেও ছাত্রলীগ নেতারা তাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।’

এর আগে ৭ জুলাই মওলানা ভাসানী হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের মধ্যাকার সংঘর্ষ  চলাকালে মিজানুর রহমান, আফ্ফান ও তারেক হাসানের বিতর্কিত ভূমিকায় দেখা যায়। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি এই নেতাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন বলেও জানা গেছে।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘ছাত্রলীগের আচরণে উপাচার্য বিব্রত হয়েছেন এটা-ঢালাওভাবে বলা ঠিক হবে না। কারণ উপাচার্যের বক্তব্যের সময় সব সংগঠনের নেতা-কর্মীরাই কটুক্তি করেছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন ‘কোন অনুষ্ঠানে বক্তার কথা চলাকালে তাকে কটুক্তি করা, এটা উচিত নয়। এটা শুধু ছাত্র সংগঠনের ক্ষেত্রে নয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে শান্ত করেছি।’


সর্বশেষ সংবাদ