‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’— ভাইরাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র

বাংলাদেশ স্টাডিজ‘ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষার প্রশ্ন
বাংলাদেশ স্টাডিজ‘ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষার প্রশ্ন   © টিডিসি ফটো

‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’ এবং ‘শয়তান দেহ পাবি, চিন্তা পাবি না’— ব্রিটিশ হিজিমনির আলোকে বিশ্লেষণ কর। এমনই প্রশ্ন হয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ‘বাংলাদেশ স্টাডিজ‘ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষায়। গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ জুন) এ পরীক্ষার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সে প্রশ্নপত্র। 

সে প্রশ্নের উপযুক্ততা নিয়ে প্রশ্নের পাশাপাশি অনেকেই ইতিবাচক-নেতিবাচক মন্তব্য করলেও প্রশ্নকারী শিক্ষকের দাবি, প্রসঙ্গ না বুঝে নিজস্ব অবস্থান থেকে সমালোচনা করছেন তারা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় মিডটার্ম পরীক্ষার বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সের প্রশ্নপত্রে এ প্রশ্ন করা হয়েছে। তবে হিজিমনি বুঝানোর জন্য সিনেমার এই ডায়ালগ বেছে নেওয়াটা যুক্তিসঙ্গত হয়নি। এই শব্দগুলো সাধারণত মানুষ নেতিবাচক আলোচনায় তুলে আনে। অন্য অনেক উদাহরণ ছিল যা দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করা যেত। তাছাড়া প্রশ্নপত্রে বাংলা ভাষা ইংরেজী শব্দে উল্লেখ করা কতটা যৌক্তিক সেটিও বিবেচনার বিষয়। 

আরেক শিক্ষার্থী শিক্ষকের প্রশংসা করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, “শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না, শয়তান দেহ পাবি, চিন্তা পাবি না" বাক্যটাকে পারিপার্শ্বিক ধরে যে প্রশ্ন করা হয়েছে তা আমার কাছে ভালোই লেগেছে বরং একটুও হাস্যকর মনে হয়নি। 

তিনি আরও বলেন, "ব্রিটিশ হিজিমনি" সেই সময়কে নির্দেশ করছে যে সময় ব্রিটিশরা তাদের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক শক্তি দিয়ে আমাদের উপমহাদেশের সাধারণ জনগনের উপর অবিচার করেছে। ১৮১৫ থেকে ১৯১৪ পর্যন্ত সময়কে মূলত এর অংশ ধরা হয়। এই সময় ব্রিটিশরা তাদের শক্তি দ্বারা পুরো বিশ্ব পরিচালনা করেছে আমরা জানি। 

"হিজিমনি" শব্দটা দ্বারা এটাও বোঝানো হয়েছে যেখানে একটি দেশ বা গোষ্ঠী সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এমনকি মিলিটারি শক্তি দিয়ে অন্যদের কে ডমিনেট করে। 

আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘দেহ পাবি মন পাবি না’ অর্থ আপনি শারীরিকাভাবে সুখ পাবেন কিন্তু মানুসিকভাবে সুখ পাবেন না। এই বিষয়টি স্যার আমাদের হাস্যরসাত্মকভাবে বুঝিয়েছেন। ব্রিটিশরা আমাদের পর পুরুষদের দ্বারা অনেক শ্রম সাধ্য কাজ করিয়ে নিতো কিন্তু তার যথাযথ মূল্যমান দিতো না। আমাদের পুরুষরা তাদের অধিকার টুকুও পেত না। তারা তখন আসলেই শারীরিকভাবে সুখ দিয়ে যেত এটা অস্বীকার করার উপায় নাই।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সের শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান সোহাগ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এই প্রশ্নে আমি কোনো সমস্যা দেখছি না। এখানে নেতিবাচক কিছু নেই। এটি কোড আনকোড। যাদের পড়িয়েছি আমি, সেখানে টেক্সট-ডকুমেন্ট দেওয়া আছে। যারা হেজিমনি পড়েছে তারা কোনো সমালোচনা করবে না।

“হয়তো বা যারা জানেন না তারা সমালোচনা করছেন। বিট্রিশ রাজরা কীভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে হেজিমনিকে প্রতিষ্ঠা করেছে তার সঙ্গে এই লাইনটি যথার্থ উদাহরণ এবং এখনও প্রত্যেক জায়গায় হেজিমনি রয়েছে। এমনকি প্রশ্নপত্র নিয়ে এখন যেটি হচ্ছে সেটিও হেজিমনির বহিঃপ্রকাশ।”

এ বিষয়ে ববির হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, কেন এমন শব্দ প্রশ্নপত্রে ব্যবহার করা হয়েছে তার সঠিক ব্যাখ্যা যিনি প্রশ্নটি করেছেন তিনি বলতে পারবেন। যেহেতু একজন সম্মানীত শিক্ষকের প্রশ্ন, সেহেতু তার কাছে এটার যৌক্তিক ব্যাখ্যাও আছে বলে আমি মনে করি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence