সকালে হাঁটতে বেরিয়ে প্রতিবেশী ব্যাংকারের মারধরের শিকার ইবির অধ্যাপক

ইবি শিক্ষকের উপর হামলাকারী ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল মাহমুদ
ইবি শিক্ষকের উপর হামলাকারী ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল মাহমুদ  © সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমানকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। হামলাকারী সোহেল মাহমুদ অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের কুষ্টিয়া জেলার চৌড়হাস শাখার কর্মকর্তা। আজ বুধবার (৭ জুন) সকালে কুষ্টিয়ার হাউজিং ডি ব্লক আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও হাঁটতে বের হন অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজ। ভোর ছয়টায় হাঁটতে হাঁটতে আবাসিক এলাকার হাউজিং ডি ব্লকের সামনে এলে তার ওপর হামলা করেন প্রতিবেশী ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল। এ সময় ড. মোস্তাফিজকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা। এতে ড. মোস্তাফিজের বাম হাতের আঙুলে গুরুতর আঘাত লাগে।

এসময় তাকে পরিবার সহ কুষ্টিয়া শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেন এবং না গেলে প্রাণনাশের হুমকিও দেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা। পরে ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন ও তার সহকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী তাকে উদ্ধার করেন। পরে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগেও একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. আব্দুল বারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছিলেন বলে জানা গেছে। 

অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী বলেন, আমরা ছয়জন মিলে একটা বিল্ডিং তৈরি করছি। তার পাশেই উনার বাসা। সমস্যার মূল কারণ হলো, আমরা কেন তার বাসার পাশে ছয়তলা/সাততলা বিল্ডিং করছি? আগে থেকেই তিনি হুমকি দিয়ে আসছিলেন। আজকে স্যারকে (মোস্তাফিজুর রহমান) একা পেয়ে তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, শারিরীকভাবে আঘাত করেছেন।

ভুক্তভোগী অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি অবগত করেছি। তারা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।

এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেন, আমার জমি ব্যবহার করে তার বাড়ি প্লাস্টার করতে চেয়েছিল। আমি অনুমতি না দেওয়ায় আমার এসব অভিযোগ করছেন। 

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, আগেও এটা নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। তখন আমাদের শিক্ষকরা মিলে এর একটা মিমাংসা করেছিলাম। তারপর আজ আবার এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটেছে। আমরা আবারও বিষয়টি নিয়ে বসে নিজেদের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করবো। যেহেতু একসাথে দীর্ঘদিন ধরে পাশাপাশি প্রতিবেশী হিসেবে বসবাস করা লাগবে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহেদ আহমেদ বলেন, ঘটনা শোনার পর হাসপাতালে ভুক্তভোগী শিক্ষকের সাথে দেখা করেছি। পরে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিলে বাসায় পাঠিয়ে দিই। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমরা তাকে যথাসম্ভব সহযোগিতা করবো।

প্রসঙ্গত, এর আগে ভুক্তভোগীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষক কুষ্টিয়ার হাউজিংয়ের ডি ব্লকে বাড়ি নির্মাণ শুরু করলে বাধা দেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা। পরে তিনি কুষ্টিয়া পৌরসভায় অভিযোগ করলে সার্ভেয়ার এসে বিষয়টির মীমাংসা করে দেন। কিন্তু পরে কাজ শুরু করলে আবারও তিনি শিক্ষকদের হুমকি দেন। গত বছরের জুলাই মাসে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল বারিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার অধ্যাপক।


সর্বশেষ সংবাদ