দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে কম খাচ্ছেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

  © সংগৃহীত

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগাম যেন টানার কেউ নেই। বছরের ব্যবধানে অধিকাংশ জিনিসপত্রের দাম এখন দ্বিগুণ। এই দামের প্রভাব পড়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আবাসিক হল ডাইনিং, মেস এবং আশেপাশের হোটেলের খাবারের দামে। এ অবস্থায় বাড়তি টাকার চাহিদা মেটাতে না পেরে অনেক শিক্ষার্থী এখন কম খাচ্ছেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আয়ের উৎস টিউশনির সম্মানি বাড়েনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাবিপ্রবির অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটের সামনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের, মদিনা মার্কেট এবং নয়াবাজার এলাকায় থাকেন। এসব এলাকার শিক্ষার্থীরা মদিনা মার্কেট, নয়াবাজার এবং টুকের বাজারে প্রয়োজনীয় বাজার করে থাকেন।

সরজমিনে বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, পূর্বের চেয়ে প্রতিটি সবজির দাম ১০-২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তেল, পেঁয়াজ, রসুন, মাছ, মুরগি, গরুর মাংসের দাম দিন দিন হাতের নাগালের বাইরে  চলে যাচ্ছে। 

এদিকে, ক্যাম্পাস গেট এবং তার পার্শ্ববর্তী হোটেলগুলোতে খাবারের দাম সর্বনিম্ন ৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। হলের ডাইনিংয়ে খাবারের দাম সর্বনিম্ন ২৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। তবে হলের ভাত যে চাল দিয়ে রান্না করা হয় তা নিম্নমানের চাল ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে আসেন। নিজের খরচ চালাতে অনেকেই টিউশনি করে থাকেন। যা তাদের উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম। তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রতিমাসে নির্ধারিত বাজেটের টাকা দিয়ে চলতে হিমশিম হচ্ছে তাদের।

এ বিষয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহান বলেন, টিউশনির সম্মানি আগের মতোই আছে। কিন্তু করোনার সময় অর্ধেক যাত্রী উঠানোর বিধি দেখিয়ে ভাড়া দ্বিগুণ করে। এরপরে করোনা গেলেও আর ভাড়া কমেনি। এই অবস্থায় যারা টিউশনি করিয়ে নিজেদের খরচ চালান তাদের খরচ আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। অন্যদিকে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়াতে মেসের খরচ তো অনেক বেড়েছে। প্রতি মাসে বাড়তি টাকার চাপে আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা অধিকাংশ শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কঠিন করেছে জীবন। সেই হারে কিন্তু বাড়েনি আয়। আগে যেখানে দৈনিক খাওয়ার খরচ ১০০-১২০ টাকার মধ্যে মিটে যেত, সেখানে এখন দ্বিগুণ ব্যয় হয়। এ অবস্থায় বাড়তি টাকার চাহিদা মেটাতে না পেরে আমরা অনেকে কম খাচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়লেও, শিক্ষার্থীদের আয় বাড়ছে না। ফলে অনেক শিক্ষার্থী কষ্টে দিন পার করছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক। তবে গরীব ও হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা একটা ফান্ড রয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে দেয়া হয়ে থাকে।


সর্বশেষ সংবাদ