করোনা রোগীদের চিকিৎসা করতে চান ৩৯তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিতরা

  © ফাইল ফটো

দেশে চিকিৎসাসেবার বেহাল দশা কাটাতে ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের ব্যবস্থা করে সরকার। সে অনুযায়ী প্রায় পাঁচ হাজার চিকিৎসকের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ওই বিশেষ বিসিএসে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও এখনো নিয়োগ পাননি অন্তত ৬২ জন চিকিৎসক।এখন করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট দুঃসময়ে তারা সেবা করার সুযোগ করে দেয়ার আহবান জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ৩৯তম বিসিএসে সর্বমোট চার হাজার ৭৯২ জন ডাক্তারকে নিয়োগ দেয়ার সুপারিশ করে পিএসসি। তবে গত ১৮ নভেম্বর, ৮ ডিসেম্বর ও ২০ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চার হাজার ৬২৯ জনকে সহকারী সার্জন ও সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

তবে সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত চার হাজার ৭৩০ জনের মতো নিয়োগ পেয়েছেন বলে ওই বিসিএসে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা জানিয়েছেন। আর অন্তত ৬২ জন ৩৯তম বিসিএস থেকে নিয়োগ বঞ্চিত থেকে গেছেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশ ভেরিফিকেশন থেকে তারা বাদ পড়েছেন বলে জানতে পেরেছেন। তবে এর পেছনে রাজনৈতিক বিবেচনা কিংবা অন্য কোনো কারণ রয়েছে বলে একাধিক নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেছেন।

এরইমধ্যে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নতুন করে দুই হাজার চিকিৎসক ও ছয় হাজার নার্স নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।

এ সঙ্কটকালে ৩৯তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিতরা করোনা রোগীদের সেবা করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, তাদের যে কারণে নিয়োগ বঞ্চিত করা হচ্ছে, তা যৌক্তিক নয়। এখন ডাক্তার নিয়োগ দেয়ার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী তারাও নিয়োগ চান। এরমাধ্যমে করোনা সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে তারা ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে মনে করছেন।

৩৯তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিতদের অন্যতম ডা. মামুন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘পিএসসি আমাদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। পুলিশ ভেরিফিকেশনে বাদ পড়েছি বলে জানতে পেরেছি। অন্য কোনো কারণ থাকলেও তা জানার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘এখন করোনার কারণে মানুষ অসহায় অবস্থায় রয়েছে। অনেকে চিকিৎসা পাচ্ছে না। আমাদেরকে নিয়োগ দেয়া হলে আমরা তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে পারি। নতুন করে যে চিকিৎসক নিয়োগের কথা উঠছে, তারসঙ্গে আমাদেরও নিয়োগ নিশ্চিত করা হোক। আমরাও করোনা রোগীদের সেবা করার সুযোগ পেতে চাই।’

জানা গেছে, ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে নিয়োগ না পাওয়াদের মধ্যে ৩৮ জন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। তাতে সুপারিশকৃতদের মধ্যে নিয়োগ বঞ্চিত সহকারী সার্জন ও সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে নিয়োগের দেয়ার জন্য আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুপারিশকৃত ৩৮ জনকে নিয়োগ প্রশ্নে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

সেজন্য সরকারের নিকট বাদপড়াদের কেন নিয়োগ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন আদালত। তবে এরইমধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই রিট আবেদনের এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। এরমধ্যেই নিয়োগ দেয়ার জন্য এ দাবি জানালেন ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিত চিকিৎসকরা।


সর্বশেষ সংবাদ