ডিআইইউ: সেশনজট এড়াতে ফের অনলাইন পরীক্ষা, আজ শুরু

  © টিডিসি ফটো

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে শিক্ষার্থীদের সেশনজট এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনায় অনলাইন পাঠদান সচল রয়েছে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রবিবার (৯ আগস্ট) থেকে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) আবারও শুরু হয়েছে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা।

সম্প্রতি এক অনলাইন প্রেস ব্রিফিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচা‌র্য অধ্যাপক ড. কে এম মোহসিন জানান, দেশের এই সংকটময় মুহুর্তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সকল নিয়ম মেনেই আমাদের পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে৷ দেশের এই ক্রমবর্ধমান সংকটকে বাঁধা হিসেবে না নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের সেশনজটের কথা মাথায় রেখেই অনলাইন পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি৷ ইংরেজি ও সিএসই বিভাগের পরীক্ষা শুরু ৯ আগস্ট এবং ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের পরীক্ষা শুরু হবে ১৬ আগস্ট।

টিউশন ফির ব্যাপারে তিনি বলেন, বর্তমান সংকটকালীন সময়ে অনেক শিক্ষার্থী আর্থিক সংকটে আছে। তাদেরকে টিউশন ফি আদায়ে কোন প্রকার চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে না। যার যতটুকু সামর্থ্য আছে সে ততটুকু পরিশোধ করবে।যারা পুরো টিউশন দিতে পারবে তারা পুরোটা পরিশোধ করবে। যারা ৫০% দিতে পারে তারা সেটাই পরিশোধ করবে। আর যারা এখন একেবারে দিতে পারছে না তারাও ইমেইলের মাধ্যমে আবেদন করে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান এস জুবাইর আল আহমেদ জানান, করোনাভাইরাসের আতংক এখন সারা বিশ্বেই বিরাজ করছে। বৈশ্বিক এই সংকট এর প্রভাব থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে ইউজিসির থেকে একটা ইতিবাচক নির্দেশনা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা যাতে সেশনজটে না পড়ে সেজন্যই অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি। সকল শিক্ষকরা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও বেশ ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। প্রযুক্তির সফল ব্যবহারে বহির্বিশ্বে অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়া হয়ে থাকে। আমরাও সেই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে সেশনজট ও পরীক্ষাজটমুক্ত রাখতে চাই।

তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যানের কথা চিন্তা করেই অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। তাদের জীবন থেকে যাতে মূল্যবান সময় নষ্ট না হয়। নির্ধারিত সময়েই যাতে তাদের কোর্স সম্পন্ন করতে পারে। সেজন্যই অনলাইন পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। ছাত্র-ছাত্রীরাও আমাদের সাথে একমত হয়েছে এবং তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অথরিটি যথেষ্ট নমনীয়। কোন শিক্ষার্থীকে টিউশন ফি দিতে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না। যে যতটুকু পারে টিউশন ফি পরিশোধ করবে। তবে যারা পুরো টিউশন ফি পরিশোধ করবে তাদের জন্য রয়েছে টিউশন ফির ওপর বিশেষ ছাড়!

অনলাইন পরীক্ষা প্রসঙ্গে সিভিল বিভাগের চেয়ারম্যান এবং সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, সমগ্র বিশ্বের মত আমাদের দেশও কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্ত। বিশ্বের বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও থেমে নেই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম। আমরাও শিক্ষার্থীদের সেশনজটমুক্ত রাখতে অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি। এতে সেশনজট এড়ানো যাবে। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপ মুক্ত থাকবে। তাছাড়া টিউশন ফি আদায়ে শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের চাপ দেয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষাকরা খুবই মানবিক। যারা নেটওয়ার্কের বাহিরে থাকবে, অনলাইনে পরীক্ষা দিতে পারবে না, তারা মোবাইল ফোনে কল করে মৌখিক পরীক্ষা দিতে পারবে। আর এ্যাসাইনমেন্ট পরে জমা দিতে পারবে। শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে সেশনজট সমস্যা এড়াতেই অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।