ইউজিসিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভর্তি নিচ্ছে আইইউবিএটি ও ইস্ট ওয়েস্ট

লোগো
লোগো

নভেল করোনাভাইরাসের বন্ধের সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ রাখার জন্য গত রোববার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। তবে তদারক সংস্থা ইউজিসির সেই নির্দেশনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়।

অনলাইনে ভর্তি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউজিসির ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসির পরামর্শ অমান্য করে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। এমনকি দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সামার সেমিস্টারে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়া স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত অনৈতিক। ইউজিসির সাম্প্রতিক অফিস আদেশেও এ ধরনের কার্যকলাপের কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা অত্যন্ত দুঃখজনক। 

যদিও ইউজিসির এ নির্দেশনা অমান্য করে অনলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছে আইইউবিএটি। বিশ্ববিদ্যালয়টির ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ভর্তি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেও অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার সত্যতা পাওয়া যায়। ভর্তির বিষয়ে জানতে আইইউবিএটির ভর্তি কার্যালয়ে সেলফোনে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, তাদের ভর্তি কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালিত হচ্ছে। আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ভর্তির আবেদন করা যাবে।

তবে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন আইইউবিএটির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো: লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের এখানে সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আমরা ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ রেখেছি।

একইভাবে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম চালাচ্ছে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বিবিদ্যালয়টির ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তবে পরীক্ষা কিংবা ভর্তির নির্দিষ্ট কোন তারিখ সেখানে উল্লেখ করা হয়নি।

অনলাইনে ভর্তির ফরম পূরণ এবং ফরমের মূল্য নেওয়া ছাড়া আর কোন কার্যক্রম হচ্ছে না বলে দাবি করেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম এম শহীদুল হাসান। তিনি বলেন, আমাদের ওয়েবসাইটে শুধু ভর্তির ফরম পূরণ করানো হচ্ছে। তবে অন্য সব বন্ধ রয়েছে। পরীক্ষার তারিখ, ভর্তি এসব কোন কিছুই হচ্ছে না। ভর্তির ফরম পূরণ না হলে অথবা ভর্তির তথ্য না দিলে শিক্ষার্থীরা মনে করবে আমরা ভর্তি নিচ্ছি না। তারা যেন তেমনটি মনে না করে সেজন্য আমরা শুধুমাত্র ফরম পূরণ চালু রেখেছি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের নির্দেশনায় স্পষ্ট করে বলা আছে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কোন কার্যক্রম চালানো যাবে না। তবে নির্দেশনা অমান্য করে যদি কোন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়া চলমান রাখে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ইউজিসি ব্যবস্থা নেবে।

তিনি আরো বলেন, সারা দেশে এখন সবাই আতঙ্কে আছে। মানুষ বাঁচলে তবেই তো ভর্তি হবে। মানুষই যদি না বাঁচে তাহলে ভর্তি হবে কারা? দেশের এমন পরিস্থিতিতেও যারা ভর্তি নিচ্ছে তারা অমানবিক কাজ করছে। এদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের এই ক্রান্তিকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক মনোভাব বন্ধ করা জরুরি।

শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ভর্তি না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, এই সময় একজন শিক্ষার্থীকে তাদের বাবা-মার সেবা করা উচিৎ। গ্রামের মানুষদের সচেতন করে তোলাসহ শিক্ষার্থীদের সামাজিক কাজে নিয়োজিত থাকা উচিৎ।


সর্বশেষ সংবাদ