করোনাভাইরাস

সেমিস্টার ফাইনাল ছাড়াই গ্রেডিং দেবে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা না নিয়েই শিক্ষার্থীদের গ্রেডিং করতে যাচ্ছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। চলতি সেমিস্টারের ক্লাসসহ ২৫ শতাংশ শিক্ষা কার্যক্রম বাকি থাকতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি নির্দেশনায় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা না নিয়ে শিক্ষার্থীদের এ পর্যন্ত কোর্সওয়ার্কের ভিত্তিতে গ্রেড দেওয়ার কথা জানানো হয়। তবে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক বলছেন, এটা নিয়মের লংঘন। কারণ অ্যাকাডেমিক কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে তা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ‘একক সিদ্ধান্তে’ ওই নোটি জারি করেছেন।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর ভিডিও কনফারেন্স বা অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু তা আর হয়নি। এরপর হঠাৎ করেই নোটিশ দেওয়া হয় যে ক্লাস নেওয়ার দরকার নেই, অনলাইন ক্লাসও হবে না, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা না নিয়েই গ্রেডিং করতে বলা হল। উপাচার্য ‘একাই’ ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দাবি করে সেই শিক্ষক বলেন, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে এ সিদ্ধান্ত হয়নি, এটা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের লংঘন।

একটি সেমিস্টারে ১২-১৩ সপ্তাহ ক্লাস নেওয়ার কথা থাকলেও চলতি সেমিস্টারে নয় সপ্তাহ ক্লাস হয়েছে জানিয়ে ওই শিক্ষক বলেন, ক্লাস, ক্লাস টেস্ট এবং ক্লাস অ্যাসাইমেন্ট বাকি আছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, কোনো সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা হবে না। মিডটার্ম পরীক্ষা, ক্লাস টেস্ট, অ্যাসাইনমেন্ট যা নেওয়া হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করেই গ্রেডিং করতে হবে।”

এই সেমিস্টারে কেউ যাতে ফেল না করে সে বিষয়েও শিক্ষকদের বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্র্যাকের আরেকজন শিক্ষক। তিনি বলেন, “এটা কোনোভাবেই ঠিক না। অ্যাকাডেমিক কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ছাড়া হতে পারে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ভিনসেন্ট চ্যাংয়ের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তামিম বলছেন, ওই সিদ্ধান্তের পর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন তারা। বিষয়টি পর্যালোচনা করা হতে পারে।

আর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেছেন, চলমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তারপরও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কেন ‘ব্যস্ত’ হচ্ছে, তা তাদের ‘বোধগম্য’ নয়।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় সংক্রমেণ এড়াতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রথমে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ছুটির ঘোষণা দেওয়া হলেও পরে তা ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সরকার গত ২৪ মার্চ ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর সেদিনই রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।


সর্বশেষ সংবাদ