১৪ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:১১

‘হিটলারের’ মতো আচরণ করবেন না— জাফরুল্লাহকে জিএস

  © ফাইল ফটো

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে মুক্ত করেছে শিক্ষার্থীরা। বৈধ উপাচার্য নিয়োগ এবং ব্যবসায় প্রশাসন ও ফিজিওথেরাপি বিভাগের অনুমোদনের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।

একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আগামী বৃহস্পতিবার পুনরায় সামগ্রিক বিষয় সমাধানে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন তিনি। এরপর অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। তবে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে হিটলারের মতো আচরণ না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের জিএস।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাঁর কথায় আশ্বস্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করার সুযোগ দেয়। এর আগে প্রায় দেড় ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আলোচনায় বসতে বাধ্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথীরা। দুপুর সোয়া দুইটায় এ আলোচনা শুরু হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) মো. জুয়েল রানা, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মো. নজরুল ইসলাম রলিফ, সাধারণ ছাত্র পরিষদের রনি আহমেদ, মাহবুবুর রহমান রনি, শেখ খোদারনুর রনি তাদের দাবি উপস্থাপন তুলে ধরেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সমস্যার সমাধান না হওয়ার জন্য তারা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে দায়ী করেন। বক্তব্যে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম রলিফ বলেন, ‘আপনাকে দেশের মানুষ অনেক সম্মান করে, আপনি দয়া করে হিটলারের মতো আচরণ করবেন না। হিটলারকে সারা পৃথিবীর মানুষ ঘৃণা করে। এমন সময় যেন তৈরি না হয় যেন আপনাকেও আমাদের অসম্মান করতে হয়। তাই আপনি আজ এখানেই আমাদের সমস্যার সমাধান করে যাবেন।’

শিক্ষার্থীদের দাবি উপস্থাপন শেষে বক্তব্য রাখেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বক্তব্যে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানুকে বৈধ বলে ঘোষণা করেন। এতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় ডা. জাফরুল্লাহ বক্তব্য সম্পন্ন না করে চলে যেতে চাইলে শিক্ষার্থীরা পুনরায় তাকে অবরুদ্ধ করে। এছাড়া তিনি ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অনুমোদন, ছাত্র সংসদের মেয়াদ বৃদ্ধি ও বাজেট সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে না পারেননি।

আলোচনায় সাধারণ ছাত্র পরিষদের অন্যতম নেতা শেখ খোদারনূর রনি বলেন, “গত চার বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বৈধ ভিসি নাই। আমরা আর কতদিন বসে থাকবো। এভাবে অবৈধ ভিসি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালানে আমাদের ভবিষ্যতের কী হবে?’’

‘‘আপনারা এভাবে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরে বিবিএ এবং ফিজিওথেরাপি বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনুমোদন নেই এভাবে আর কতদিন তারা যাবাবরের মতো বাঁচবে। আজকের এই আলোচনা থেকেই আপনাদের লিখিত দিতে হবে যত দ্রুত সম্ভব আমাদের এই দুই দফা দাবির যথাযথ সমাধান করবেন। সমাধান না দিয়ে আপনি বের হতে পারবেন না।”

জানা যায়, মঙ্গলবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ক্যাম্পাসে আসলে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নেতাদের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা তাদের ২ দফা দাবি তার কাছে তুলে ধরেন। এসময় তাদের দাবি না মেনে এক পর্যায়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রয়োজনে গণ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে বলে হুমকি দেন।

এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘জাফরুল্লাহ, জাফরুল্লাহ, মানি না, মানব না’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ স্লোগান দিতে থাকে। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তা তখন নিশ্চুপ থাকেন।