রুম্পাকে ছাদ থেকে ফেলে দেন বয়ফ্রেন্ড সৈকত!

  © টিডিসি ফটো

বেসরকারি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আবদুর রহমান সৈকতের। সেই সম্পর্কের ইতি টানতে চেয়েছিলেন সৈকত। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হল। এক পর্যায়ে সৈকত তার সহযোগীদের নিয়ে রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর সেই বাসার ছাদে নিয়ে যান। পরে তাকে ওই ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।

রুম্পার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সৈকতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এমন সন্দেহ হচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)। এ কারণে সৈকতকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে মনে করে তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছিল ডিবি। তবে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

২২ বছর বয়সী সৈকত আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের বিবিএর শিক্ষার্থী। আর রুম্পা হবিগঞ্জে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক রোকনউদ্দিনের মেয়ে।

রুম্পার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির রমনার জোনাল টিমের পরিদর্শক শাহ মো. আকতারুজ্জামান ইলিয়াস ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন। তিনি আদালতকে জানান, রুম্পার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো সৈকতের। কিন্তু দিন দিন তাদের সম্পর্কে অবনতি ঘটে। ৪ ডিসেম্বর বিকেলে তারা স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বাইরে দেখা করেন। তখন কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেন সৈকত। রুম্পা বারবার অনুরোধ করলেও সৈকত সম্পর্ক রাখতে রাজি হচ্ছিলেন না। এ নিয়ে দু’জনের মনোমালিন্য ও বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।

আকতারুজ্জামান আরো বলেন, সম্পর্কে বিরোধের জের ধরে ঘটনার দিন রাত পৌনে ১১টায় সৈকত তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে রুম্পাকে ৬৪/৪ সিদ্ধেশ্বরীর বাড়িটির ছাদে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে রুম্পাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। এটাই প্রাথমিকভাবে জোর সন্দেহ করা হচ্ছে। এ কারণে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে অজ্ঞাত মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। ঘটনার পরপরই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আলামত সংগ্রহ করেন। সুরতহালে পুলিশ গুরুতর কিছু ইনজুরি পায়। সংগৃহীত আলামত ফরেনসিকে পাঠানো হয়। ওই ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে।

মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর রুম্পার পরিচয় জানা গেলে তার সতীর্থ স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, রুম্পা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনও করছেন শিক্ষার্থীরা।

এরমধ্যে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে সৈকতকে আটক করে ডিবিতে নেয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার তাকে রমনা থানার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। আজ রবিবার রুম্পা হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।


সর্বশেষ সংবাদ