ইউজিসি’র কাছে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীর খোলা চিঠি

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি মৌসুম সামনে রেখে গত ৮ আগস্ট দেশের ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।‘ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা’ শিরোনামে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কেউ অনুমোদনহীন কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অননুমোদিত ক্যাম্পাসে অথবা অননুমোদিত কোনো প্রোগ্রাম বা কোর্সে ভর্তি হলে তার দায়-দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসি নেবে না।”

তবে ইউজিসির এমন সিদ্ধান্তে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করছেন, কোন রকম বাছবিচার ছাড়াই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা বড় ধরনের বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তারা প্রশ্ন তুলছেন, এসব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সমূহকে নানা শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ইউজিসি অনুমোদন দিয়েছে তাহলে কেন তড়িঘড়ি করে সেই অনুমোদনের উপর খড়গ চাপানো হচ্ছে। এর পিছনে অন্য কোন কারণ আছে কিনা সেটাও জানার চেষ্টা করছেন।

এ তালিকায় বাংলাদেশের স্বনামধন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ‘ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়’র নাম রাখা হয়েছে, আর তাতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। তাদের বক্তব্য হলো হলো, ইউজিসির এমন বিজ্ঞপ্তি ‘বিভ্রান্তিকর’।

এ নিয়ে সম্প্রতি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভাসির্টির অ্যালামনাই সুলতান মাহমুদ সুজন ইউজিসির উদ্দেশ্য খোলা চিঠি লিখেছেন। খোলা চিঠিতে সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘ইউজিসি সাধারণত প্রোগ্রামের অনুমোদন দেয়। দুটি ভবনে আামাদের ক্লাসের কার্যক্রম চলে আর বাকি দুটিতে লাইব্রেরি ও মিউজিয়ামসহ সাপোর্টিভ কার্যক্রম চলে। সবগুলো বিষয় ইউজিসি জানে। সুতরাং একাধিক অনুনোমোদিত ক্যাম্পাসের বিষয়টি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তারপরেও কেন আমরা এই তালিকায় পড়েছি, তা জানতে চেয়ে ইউজিসিকে চিঠি দিয়েছি আমরা।’

‘প্রাসঙ্গিক আরো কিছু ব্যাখ্যা এখানে দিতে চাই। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এক মাত্র ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রায় ৫০টির মত বাস গাড়ী আছে শুধু মাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য। এখন এই গাড়ী রাখার জায়গাকেও হয়তো ইউজিসি অননুমোদিত ক্যাম্পাস বলে দিতে পারে। অথচ এটা সাপোর্টিভ কার্যক্রম। ২০১০ সাল থেকে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের স্টুডেন্টদের মাঝে প্রায় ৩৫ হাজার ল্যাপটপ বিতরন করেছে। এখন এই ল্যাপটপ ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার এবং সার্ভিস সেন্টারও কিন্তু সাপোর্টিভ কার্যক্রম। এমনকি লাইব্রেরি-এক্সজাম অফিস ও বিজিসেন ইনকিউবেটরকেও ইউজিসি অননুমোদিত ক্যাম্পাস বলে গেছেন।’

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় বক্তব্যে উদ্যোক্তাদের কথা বলেন, স্টার্টপ এর কথা বলেন। ছাত্র-ছাত্রীরা যেন এ সকল মন-মানসিকতায় গড়ে উঠেন তারই বিবেচনায় বিজিসেন ইনকিউবেটর, স্টার্টাপ মার্কেট, চিকিৎসা সেবা, এডমিশন ইনফরমেশন সেন্টার, ডিজিটাল ক্লাস রুম, বিশাল ট্রান্সপোর্ট পুল, বিরাট অডিটোরিয়াম, বিজিনেস ইনকিউবেশন সেন্টার, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, হিউম্যান রির্সোস ডেভেলাপমেন্ট ইনস্টিটিউট ,ব্যামাগার, আন্তর্জাতিক মানের গবেষাগার, রোভার স্কাউট, বিএনসিসি ছাড়াও অসংখ্যা সুযোগ সুবিধার সৃষ্টি করেছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়। এখন এসব কাজের জন্য ব্যবহৃত একাধিক ভবনকে একাধিক ক্যাম্পাস ধরে অননুমোদনের তালিকায় ফেলাটা বিভ্রান্তিকর।’

‘এসব বিষয় ইউজিসিকে আগেই অবহিত করার পরেও কেন আমরা এই তালিকায় পড়েছি, তা জানতে চেয়ে ইউজিসিকে ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আমরা আশা করবো, ভর্তিচ্ছু এবং বর্তমান শিক্ষার্খী ও অভিভাবকরা ইউজিসির এমন বিজ্ঞপ্তির কারণে বিভ্রান্ত হবেন না। আর ইউজিসির কাছে আশা করবো তারা তাদের কার্যক্রমে দায়িত্বশীল আচরণ করবে। ইউজিসিকে আরো দায়িত্বশীল দেখতে চায় শিক্ষার্থীরা।’


সর্বশেষ সংবাদ