এক বাংলাদেশ এগোচ্ছে, আরেক বাংলাদেশ পেছাচ্ছে

  © ফাইল ফটো

অর্থনীতি, শিল্প, ব্যবসা, শিক্ষা- এসব কিছুতে গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে ব্যাপক পরিবর্তন আমরা দেখেছি। গড় আয়, গড় আয়ু বাড়ছে, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমছে। বিশ্বব্যাপী তার স্বীকৃতিও আমরা পেয়েছি। এই বাংলাদেশ যেমন এগিয়ে চলেছে, একই সাথে আরেক বাংলাদেশ পিছিয়ে যাচ্ছে, সামাজিক ও নৈতিক দিক থেকে। প্রথম আলো এবং ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিসহ বাংলাদেশে যারা আধুনিক-মননশীল শিক্ষার চর্চা করছে, যারা ভালোর পক্ষে- তাদের সম্মিলিত ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা চাইবো বাংলাদেশ এগিয়ে যাক।

বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে (ইডিইউ) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘মিট দ্য এডিটর’ শিরোনামে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, মানুষের সাথে কথা বলা আমার শখ। যত বেশি মানুষের সঙ্গে মেশা যায়, কথা বলা যায়, তত বেশি শেখাও যায়। জীবনে যা কিছু সফলতা, তা এই মেলামেশা, কথা বলা, যোগাযোগ, তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়েই অর্জন করেছি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মত প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, যেকোন প্রতিষ্ঠান গড়তে গেলে শক্তি-অর্থ প্রয়োজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুদান, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে যখন দেখি কেউ ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে বসে, তা দুঃখ দেয়। ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি এর ব্যতিক্রম। বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় তাদের ভূমিকা ও অবদান দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, প্রথম আলো সংবাদপত্রের চেয়ে একটু বেশি। যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে সবসময় আছে প্রথম আলো। শুধু ভালো খবর পরিবেশন নয়, সমাজের ভালোর জন্য নানা ধরণের কর্মকাণ্ডেও আমরা জড়িত। সেসব কাজে তোমাদের মতো তরুণদের সবসময়ের মতো আমরা পাশে চাই।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইডিইউর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান। তিনি বলেন, পঁচাত্তর বছর বয়সের মতিউর রহমান এখনো তরুণ। তারুণ্যকে ধারণ করে দেশ গঠনের আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তিনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন প্রথম আলোসহ নানা সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে। এ আদর্শে বলিয়ান হয়েই তিনি ভয়কে করেছেন জয়।

মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্যকে সামনে রেখে তা বাস্তবায়নের যে আকাঙ্ক্ষা থেকে সাহসী সাংবাদিকতা ও পরিশীলিত রাজনীতিতে প্রথিতযশা এ বুদ্ধিজীবীর অনুপ্রবেশ, একই আদর্শ থেকেই ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির যাত্রা শুরু ও পথচলা, অর্থাৎ- একটি স্বনির্ভর ও উন্নত জাতি গঠন। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে প্রথম আলো বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠিত পত্রিকাই শুধু নয়, একই সাথে একটি কার্যকরী বিজনেস মডেলে রূপ নেয়া সামাজিক প্রতিষ্ঠান।

বক্তব্য শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীরা নানা রকমের প্রশ্নে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন প্রথম আলোর সম্পাদককে। এসময় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের প্রাক্তন ও বর্তমানে ইডিইউতে মাস্টার অব পাবলিক পলিসি এন্ড লিডারশিপে পাঠরত এক শিক্ষার্থী ইস্ট ডেল্টার গবেষণা ও একাডেমিক কার্যক্রমে প্রথম আলোর সহযোগিতা প্রাপ্তির আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এরপর সমাপনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান বলেন, উদ্ভাবনী গুণ না থাকলে মতিউর রহমান বা সাঈদ আল নোমান হওয়া যায় না। উদ্ভাবকরাই নতুন যুগের সূচনা করতে পারেন। যা প্রথম আলোর মাধ্যমে মতিউর রহমান করেছেন। ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিও সে পথেই এগিয়ে চলেছে তার মৌলিক ও উদ্ভাবনী সংযোজনের মধ্য দিয়ে।

এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ওমর কায়সার, হেড অব বিজনেস শামীমুল হাসান চৌধুরীসহ ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি মেম্বার, কর্মকর্তাবৃন্দ।


সর্বশেষ সংবাদ