সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস, ৪ শিক্ষক বরখাস্ত

  © ফাইল ফটো

রাজশাহীর বাগমারায় সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দেওয়ার অভিযোগে চারজন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ সোমবার (১৮ মে) সরকারি বিদ্যালয়ের ওই  শিক্ষকদের হাতে বরখাস্তের চিঠি পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।

ওই চার শিক্ষক হলেন, বাগমারা উপজেলার বুজরুকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আয়নুল হক ও মোজাফফর হোসেন, বড়বিহানালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম ওরফে সুইট এবং কুলিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা।

ওই চার শিক্ষক বরখাস্তের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেছেন, তাঁরা বুঝতে না পেরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন এবং লাইক করেছেন। এ জন্য তাঁরা ক্ষমাপ্রার্থী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের জন্য পরিপত্র জারি করা হয়। এরপর জেলায় এটিই প্রথম ব্যবস্থা গ্রহণের ঘটনা। গত ৭ মে এ নির্দেশনা দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে। স্থানীয়ভাবে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিপত্র ফেসবুকে প্রচার করেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে, করোনাকালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ। শিক্ষকদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের তালিকা যাছাই-বাছাই করার নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওই দায়িত্ব পালন করতে বলা হয় নির্দেশনায়।

সে মোতাবেক গত ১২ মে বাগমারার ইউএনও তালিকাগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষকদের কাছে পৌঁছে দেন। তাঁদের যাছাই-বাছাই করে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর ১৩ মে শিক্ষক আয়নুল হক ওই সিদ্ধান্ত কটাক্ষ নিজেদের ‘কলুর বলদ’ উল্লেখ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।

তাঁর বক্তব্য সমর্থন করেন আরও তিনজন শিক্ষক। বিষয়টি ইউএনওর নজরে এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। তিনি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান। পরে চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দেন।

সে মোতাবেক গতকাল রোববার রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম চারজন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। আজ এ সংক্রান্ত আদেশ উপজেলার শিক্ষা অফিসে পৌঁছায়। চার শিক্ষকের কাছে আজই ওই চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরা খাতুন বলেন, বরখাস্ত শিক্ষকেরা সরকারি পরিপত্র তোয়াক্কা না করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। পরবর্তী প্রক্রিয়া অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আর বাগমারার ইউএনও শরিফ আহম্মেদ বলেন, সরকারি পরিপত্র জারির পর এমন স্ট্যাটাস অমার্জনীয় অপরাধ।


সর্বশেষ সংবাদ