করোনা: মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা দিয়ে দুঃস্থদের পাশে স্কুলছাত্রী নেফাত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০৬:৩০ PM , আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০৬:৩০ PM
নেফাত বিনতে রশীদ। রাজধানর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবে খেটে খাওয়া মানুষ ‘অভুক্ত’। টেলিভিশনে এমন খবর দেখে পাশে দাঁড়িয়েছে এই স্কুলছাত্রী। মাটির ব্যাংকে নিজের জমানো টাকা দিয়ে কেনে চাল, ডাল ও সাবান। পরে ফোনে ডেকে আনে র্যাবের এক কর্মকর্তাকে তুলে দেয় দুঃস্থদের মাঝে এসব খাবারসামগ্রী। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে- ৫০ কেজির তিন বস্তা চাল, এক বস্তা ডাল এবং ৫৩টি সাবান।
দেশের ক্রান্তিকালে স্কুলছাত্রীর এমন কাজে অবাক হয়েছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে চলছে প্রশংসার ঝড়।
র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-১) এএসপি সাইফুল মালিক নিজে যান নেফাতের বাসায়। বুঝে নেন খাদ্যসামগ্রী। র্যাবের এই কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, গত সোমবার তিনি একটি ফোন কল পান। তাকে এক স্কুলছাত্রী জানায় সে দুঃস্থদের সাহায্য করবে। এজন্য কিছু খাবার কিনেছে। যেগুলো র্যাবকে দিতে চায়, বিতরণের জন্য।
সাইফুল বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম অন্য কাউকে পাঠিয়ে খাবারগুলো আনবো। কিন্তু নেফাতের আবদার তাকেই আসতে হবে। পরে মঙ্গলবার তার বাসায় যাই। নিজের হাতেই খাদ্যসামগ্রী তুলে দেয় নেফাত। দেশের এই ক্রান্তিকালে নিজেও খাবার বিতরণ করতে বের হতে পারছে না। তার মনে হয়েছে, র্যাবের হাতে এসব খাবার দিলে তারা সঠিকভাবে দুস্থদের মাঝে পৌঁছে দিবে। তাই র্যাবের নম্বর সংগ্রহ করে ফোন দিয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়াতে আগামী ১১ তারিখ পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশ-র্যাব, সেনাবাহিনী ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেকে এসব মানুষকে সাহায্য করছে।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার বলেন, নেফাত আমাকে ফোন দিয়ে বলে আঙ্কেল আমি কিছু টাকা জমিয়েছি। প্রকৃত গরিব মানুষ যারা তাদেরকে আমি ত্রাণ দিতে চাচ্ছি। সেই টাকা দিয়ে চাল, ডাল ও সাবান কিনেছি। আপনি আমাকে সাহায্য করেন। তখন জানতে চাই তুমি কিসে পড়ো? বলল আমি ক্লাস ফোরে পড়ি। তখন আমি আগ্রহ নিয়ে আরও ছুটে যাই। বাবা-মায়ের সঙ্গে থেকে নেফাত আমাদের সব বুঝিয়ে দেয়।
কেন র্যাবকে বলল জানতে চাইলে সাইফুল মালিক বলেন, ও (নেফাত) ট্রাস্টের জায়গা থেকে র্যাবকে ডেকেছে। আর নিজেও যখন বের হয়ে দিতে পারছে না তখন র্যাবের সাহায্য নিয়েছে।