শিক্ষা আইনের খসড়া

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা

শিক্ষা আইন ২০১৯-এর খসড়ায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তর হিসেবে ধরা হয়ছে। এই আইন পাস হলে প্রাথমিক শিক্ষা আর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার সুযোগ থাকবে না। শিক্ষা আইন ২০১৯-এর খসড়ার ৯ ধারার ২(ক) উপধারায় বলা হয়েছে, সরকার নির্ধারণ বা পুনর্নির্ধারণ না করা পর্যন্ত ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত হবে মাধ্যমিক স্তর। (খ) উপধারায় বলা হয়েছে, একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিক স্তর।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা শিক্ষা আইনের একটি খসড়া পেয়েছি। তা আরো যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করা হবে। এরপর নিয়মানুযায়ী তা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষা আইন ২০১৯-এর খসড়া নিয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি এক সভা হয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে। ৫৮টি ধারাসংবলিত খসড়া পর্যালোচনা করা হয় ওই সভায়, যদিও গত কয়েক বছরে একাধিকবার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছিল। এমনকি একবার মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের পরও তা ফেরত পাঠানো হয়।

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ প্রাথমিক শিক্ষার আওতা বাড়িয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা সফল হয়নি। তবে আগামী দিনের প্রস্তুতি হিসেবে এখন ৫৯৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা চালু করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর ৫ নম্বর পৃষ্ঠায় প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বৃদ্ধি করে আট বছর অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ১২ নম্বর পৃষ্ঠায় মাধ্যমিক শিক্ষা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, নতুন শিক্ষাকাঠামোয় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা স্তর হিসেবে বিবেচিত হবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিক্ষা আইনের খসড়া যেভাবে আছে সেটা পাস হলে তা হবে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। আর সে লক্ষ্যেই সবার সম্মতিতে শিক্ষানীতিতে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে নতুন আইন পাস হলে প্রাথমিক শিক্ষা আর অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করার সুযোগ থাকবে না।