নতুন এমপিওভুক্তির তালিকায় স্থান পাওয়া প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বোর্ডে আসার নির্দেশ

নতুন এমপিওভুক্তির তালিকায় স্থান পাওয়া প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি তথ্য যাচাইয়ের কাগজপত্রের মূলকপি ও ১সেট ফটোকপি সহ ৭৫৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ঢাকা বোর্ডে আসার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

জানা গেছে, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের তথ্য যাচাইয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি পর্যায়ে ১ম পাঠদান ও স্বীকৃতির থেকে ধারাবাহিকভাবে সর্বশেষ স্বীকৃতির মূল কপি ও ফটোকপি নিয়ে নির্ধারিত সময়ে ঢাকা বোর্ডে হাজির হওয়া লাগবে। একই সাথে প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এর মধ্যে বরিশাল বোর্ডের অধীনে থাকা ৭৭টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে আগামী ৮ ডিসেম্বর এবং ও রাজশাহী বোর্ডের অধীনে থাকা ৮৫টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে আগামী ১২ ডিসেম্বর এমপিও সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডে আসতে বলা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

নীতিমালা অনুযায়ী চার শর্ত পূরণকারী প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেয়া হয়েছে। শর্তগুলো হলো- প্রতিষ্ঠানের বয়স বা স্বীকৃতির মেয়াদ, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও পাসের হার। প্রতিটি পয়েন্টে ২৫ করে নম্বর থাকে। কাম্য শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং স্বীকৃতির বয়স পূরণ করলে শতভাগ নম্বর দেয়া হয়। সর্বনিম্ন ৭০ নম্বর পাওয়া প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির জন্য বিবেচিত হয়। গত ২৩ অক্টোবর প্রকাশিত এমপিওভুক্তির তালিকায় প্রায় অস্তিত্বহীন, যুদ্ধাপরাধের আসামি প্রতিষ্ঠিত, সরকারিকৃত এবং আংশিক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।

জানা গেছে, আগামী ৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে ৪৭টি নিম্নমাধ্যমিক, ৫টি স্কুল এন্ড কলেজ ৬টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজসহ মোট ৫৮টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে, ৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে ৭৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে, ৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় বরিশাল বোর্ডের অধীনে ১৩টি নিম্নমাধ্যমিক, ৪৩টি মাধ্যমিক, ৬টি স্কুল এন্ড কলেজ, ১৫টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজসহ মোট ৭৭টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ঢাকা বোর্ডে এমপিও সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকতে হবে। আর আগামী ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় দিনাজপুর বোর্ডের অধীনে ৪৪টি নিম্নমাধ্যমিক, ১০টি স্কুল এন্ড কলেজ, ১৩টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজসহ মোট ৬৭টি, ১০ডিসেম্বর সকাল ১০টায় দিনাজপুর বোর্ডের অধীনে ৯৬ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের, ১১ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় রাজশাহী বোর্ডের অধীনে ৫৩টি নিম্নমাধ্যমিক, ৩৫টি মাধ্যমিকসহ মোট ৮৮টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে, ১২ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় রাজশাহী বোর্ডের অধীনে ৭১টি মাধ্যমিক, ৯টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ৫টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজসহ মোট ৮৫টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ঢাকা বোর্ডে এমপিও সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

এছাড়া আগামী ২২ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় যশোর বোর্ডের অধীনে ৫৬টি নিম্নমাধ্যমিক, ৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ মোট ১০৬টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে এবং ২৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় যশোর বোর্ডের অধীনে ৭৬টি মাধ্যমিক, ৬টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ২০টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজসহ মোট ১০২টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ঢাকা বোর্ডে এমপিও সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ১ম পাঠদানের অনুমতি এবং পর্যায়ে ভিত্তিক স্বীকৃতির প্রথম কপি ও শেষ আদেশের মূলকপি ও সত্যায়িত ফটোকপি নিয়ে আসতে হবে। এছাড়া ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের প্রতিষ্ঠানগুলোর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের শ্রেণিভিত্তিক ভর্তি রেজিস্টার ও শ্রেণি ভিত্তিক হাজিরা খাতার মূলকপি ও সত্যায়িত ফটোকপি তথ্য যাচাইয়ে প্রয়োজন হবে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের ২০১৫.২০১৬, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্তরভিত্তিক পাবলিক পরীক্ষার ফরমপূরণ, রেজিস্ট্রেশনের প্রিন্ট কপি, রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমার রশিদ ও স্তরভিত্তিক পাবলিক পরীক্ষায় ফলাফলের মূল কপি ও সত্যায়িত ফটোকপি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের তথ্য যাচাইয়ে প্রয়োজন হবে।

গত ১২ গঠিত নভেম্বর স্কুল ও কলেজের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে ৭ সদস্যের কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. গোলাম ফারুককে। তারা সঠিকতা যাচাই করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাবে। গত ২৩ অক্টোবর প্রকাশিত এমপিও তালিকায় স্থান পাওয়া এক হাজার ছয়শ পঞ্চাশটি স্কুল ও কলেজের তথ্য যাচাই করবে এই কমিটি। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মাধ্যমিক) এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধিকেও রাখা হয়েছে কমিটিতে।

জানা যায়, এর আগে নতুন এমপিওভুক্তির জন্য গত বছরের আগস্টে আবেদন করে নয় হাজার ৬১৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে দুই হাজার ৭৩০টি প্রতিষ্ঠানকে ২৩ অক্টোবর এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়। এরমধ্যে ২০৪টি প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ বিবেচনায় এমপিও দেয়া হয়। তালিকা প্রকাশের পর বিভিন্ন রকমের প্রতিক্রিয়া দেখা যায় বঞ্চিত ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে।

 

 


সর্বশেষ সংবাদ