বেতন কমা নিয়ে যা বললেন অর্থ ও প্রাথমিক সচিব

(বাঁ থেকে) অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন
(বাঁ থেকে) অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন

প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় থাকা নতুন বেতন গ্রেডে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের মূল বেতন যেন কমে না যায় সেটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।

এছাড়া শিক্ষকদের উন্নীত গ্রেডে বেতন ফিক্সেশনে বেতন যেন কমে না যায় সেজন্য নিম্নধাপের পরিবর্তে উচ্চ ধাপে বেতন নির্ধারণ করা হবে বলে জানায় সচিবরা। একইসঙ্গে বাকি সমস্যাগুলো পর্যায়ক্রমে নিরসন করার আশ্বাসও দেন।

আজ মঙ্গলবার বেতন বৈষম্য নিরসনে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় থাকা নতুন বেতন স্কেল নিয়ে আলোচনা হয়।

দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষক প্রতিনিধিরা। আলোচনাকালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও সহকারি শিক্ষকদের ১১ গ্রেডে বেতন নির্ধারণের দাবি জানায় প্রতিনিধি দল। এছাড়া উন্নীত গ্রেডে বেতন নির্ধারণের সময় বিএসআর এর ৪২/১/২ এর ধারানুসারে নিম্নধাপে বেতন নির্ধারণের কারণে সকল সহকারি শিক্ষকদের মূল বেতন কমে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

শিক্ষকদের এই দাবির জবাবে অর্থ সচিব বলেন, ১০ম গ্রেড ও ১১তম গ্রেডের বিষয়টি নিয়ে এ মুহুর্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। এই বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে এবং ধারাবাহিকভাবে চলবে।

তিনি আরও জানান, এ মুহূর্তে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত ১১ ও ১৩ গ্রেডের সম্মতিপত্র অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষকেরা যদি প্রস্তাবনা পাঠায় তা দ্রুত কার্যকর করা হবে এবং শিক্ষকদের উন্নীত গ্রেডে বেতন ফিক্সেশনে বেতন যেন কমে না যায় সেজন্য নিম্নধাপের পরিবর্তে উচ্চ ধাপে বেতন নির্ধারণ করা হবে। বাকি সমস্যাগুলো পর্যায়ক্রমে নিরসন করা হবে।

পড়ুন:১১তম গ্রেডি নিয়ে আন্তরিক মন্ত্রণালয়-অধিদপ্তর, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতেই সুরাহা!

এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ও সচিব  মো. আকরাম-আল-হোসেসের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষক প্রতিনিধিরা। সেখানে সচিব বলেন, শিক্ষকদের কাঙ্খিত গ্রেড পর্যায়ক্রমে পূরণ করা হবে। এজন্য আমাদেরকে সময় দিতে হবে। তবে যে গ্রেডেই বেতন নির্ধারণ করা হোক না কেন বেতন ফিক্সেশনের সময় ধাপে না মিললে উচ্চধাপে নির্ধারণ করা হবে। এসময় প্রধান শিক্ষকদের ১০ গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১ গ্রেড দাবি যুক্তিসঙ্গত বলে মন্তব্য করে সচিব বলেন, তবে এর জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

বর্তমান নিয়োগ বিধি/২০১৯ অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করলে অনেক শিক্ষক উন্নীত গ্রেডে পাবেন না। এ বিষয়টি সচিবের কাছে উল্লেখ করা হলে সচিবরা বলেন, বিষয়টি বিবেচনায় আছে।

আজকের আলোচনায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. জাকির হোসেন মন্ত্রী শিক্ষকদের জানান, আপনাদের সাক্ষাতের বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেছি। প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে এলেই সাক্ষাতের সময় পাওয়া যাবে। সেখানে আপনাদের ১০ম ও ১১ গ্রেডের বিষয়টি আলোচনা করা হবে।

এর আগে ১৫ নভেম্বর ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসানের সঙ্গে তার বাসভবনে শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসনে বৈঠক করেন। সেখানে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ১০ ও ১১ গ্রেডের দাবি উপস্থাপন করেন।

আজকের আলোচনা শেষে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের দাবিতে অনঢ় আছি এবং এই প্রস্তাবনা হতে হবে উচ্চ ধাপে।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. আনিসুর রহমান, সদস্য সচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ, প্রধান মুখপাত্র মো. বদরুল আলম, প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইসলাম তোতা, মুখপাত্র এনএ সিদ্দিকী বদিউল, প্রধান সম্পাদক আতিকুল ইসলাম, সদস্য বেগম বাঁধন খান ববি, মো. মশিউর আলম, জাকির হোসেন প্রমুখ।

পড়ুন: ১১তম গ্রেড: সাফ জবাব দিলেন প্রাথমিক সচিব


সর্বশেষ সংবাদ