প্রাথমিক শিক্ষকদের সন্তানের শিক্ষা ভাতা কর্তন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানের শিক্ষা ভাতা কর্তন করা হয়েছে। সন্তানদের কিন্ডারগার্ডেনে কিংবা অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করানোর জন্য শাস্তিমূলক এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের সন্তানের ভাতা কর্তন করে আলোচনায় এসেছেন পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম।

হঠাৎ শিক্ষা কর্মকর্তা এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় উপজেলার প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ আর হতাশা। শুধু একটি উপজেলায় কেন এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে প্রশ্ন শিক্ষকদের। এছাড়া হঠাৎ এই ধরণের সিদ্ধান্তে বিচলিতও শিক্ষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষকদেরসহ সকল সরকারি চাকরিজীবীদের সন্তানদের শিক্ষা ভাতা হিসেবে ১টি সন্তানের জন্য মাসিক ৫০০ টাকা হারে সর্বোচ্চ ২ সন্তানের এই শিক্ষা ভাতা প্রযোজ্য আছে। শিক্ষকদের সন্তানদের কিন্ডারগার্ডেনে কিংবা অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনাকে কারণ দেখিয়ে চাটমোহর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে উপজেলাধীন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানদের প্রাপ্ত শিক্ষা ভাতা কর্তন করে দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষকদের অভিযোগ, এই ভাতা কর্তনের ক্ষেত্রে কোন উপজেলার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষককেই এ বিষয়ে কোন সতর্কীকরণ নোটিশ দেয়া হয়নি। এছাড়া জেলার মধ্যে অন্য কোন প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক এমন সিদ্ধান্ত গ্রহন কিংবা সরকারি ভাবে কোন রকম পরিপত্র জারি না থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত হয়েছেন শিক্ষকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রাথমিক শিক্ষক জানান, আমরা সরকারি চাকরি করি। আমার সন্তানকে আমার সুবিধা মতো কোথায় পড়াশুনা করাবো সে সিদ্ধান্ত আমার পরিবারের এবং আমার একান্ত ব্যক্তিগত। যেখানে এ বিষয়ে সরকারি কোন পরিপত্র নেই বা দেশের কোথাও কোন শিক্ষা কর্মকর্তা এমন সিদ্ধান্ত নেয়নি তাহলে কেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা এমন সিদ্ধান্ত নেবেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলামের কাছে শিক্ষকদের সন্তানের শিক্ষা ভাতা বন্ধে সরকারি ভাবে কোন পরিপত্র কিংবা বিধি বিধান আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি কোন পরিপত্র না থাকলেও কয়েক বছর আগের একটি রেজুলেশন আমার কাছে আছে। আমার খারাপ লাগে যখন কোন কিন্ডারগার্ডেনের অনুষ্ঠানে আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষকের সন্তান আমার হাত থেকে পুরস্কার গ্রহন করে। তখন ভাবি এই শিশুটিও তো আমার কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করলে সে আজ সেই স্কুলের হয়ে পুরস্কার গ্রহন করতো। শিক্ষকদের শিক্ষা ভাতা বন্ধ করে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, তারা যদি তাদের সন্তানকে নিজ নিজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে আবার এই ভাতা চালু করে দেওয়া হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও চাটমোহর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ জানান, ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বেশকিছু শিক্ষক আমাকে জানিয়েছে। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখে জানলাম- এটা সম্পূর্ণ বিধি বিধান পরিপন্থি ও অমানবিক কাজ করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা। গত কয়েকদিন আগেও তাকে শিক্ষকদের সন্তানের এই শিক্ষা ভাতা চালু করে দেওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু তিনি কেন চালু করলেন না বিষয়টি আমার বোধগোম্য না। আমি এ বিষয়ে আবারও তার সঙ্গে কথা বলব।

পড়ুন: প্রাথমিকে বেতন বৃদ্ধি: প্রতিমন্ত্রী-সচিবের বক্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ