প্রাথমিক শিক্ষকদের পদ-পদবি নিয়ে দ্বন্দ্ব

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দেওয়ার এক দফা দাবিতে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষকরা। আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মাঠ পর্যায়ের পদ-পদবি নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে। সেখানে শিক্ষকদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। বেতন-বৈষম্য নিরসন ও গ্রেড পরিবর্তনের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনে যাচ্ছেন সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় পৌনে চার লাখ শিক্ষক। এজন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের মোট ১৪টি সংগঠন মিলে সম্প্রতি গঠিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’। এই পরিষদের মাধ্যমে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত জানাতে রোববার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

এ সময় জেলা উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ পদ-পদবি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। মাঠ পর্যায়ের শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করেন, আন্দোলনের সময় আমরা শিক্ষকদের জড়ো করে থাকি। এ পর্যন্ত সকল আন্দোলনে বড় ভুমিকা রাখলেও সংগঠনে আমাদের কোনো পদে রাখা হয়নি। অযোগ্যদের বড় পদে বসানো হয়েছে। ‘আমরা এটি মানি না’, ‘জুড়ে বসা নেতাদের অধীনে কোনো আন্দোলনে যেতে চাই’ না বলে বিক্ষোভ শরু করেন।

পরিস্থিতি শান্ত করতে কেন্দ্রীয় নেতারা তাদের বারবার শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানালেও প্রতিবাদের আওয়াজ আরও বাড়তে থাকে। এ পর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে কেউ কেউ আসন ছেড়ে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।

এ সময় সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘আমাদের পদ-পদবি নিয়ে আন্দোলন নয়, গ্রেড বৈষম্যের নিরসনের একদফা দাবি নিয়ে মাঠে নামতে চাই। মাঠ পর্যায়ে কেউ কেউ নিজেদের মতো কমিটি গঠন করে এসব দ্বন্দ্ব তৈরি করছেন। এসব সমস্যা উপজেলা পর্যায়ে নিরসন করতে হবে।’

তিনি বলেন, আমরা ১৪টি সংগঠন মিলে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করলেও সেখানে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, আর আপনারা একই উপজেলা থেকে পদ নিয়ে শৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। পরে হট্টগোলের মধ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ হয়।

এছাড়া আজকের সংবাদ সম্মেলনে, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী— আগামী ১৪ ও ১৫ অক্টোবর যথাক্রমে ১ ঘন্টা, ২ ঘন্টা কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১৬ ও ১৭ অক্টোবর যথাক্রমে অর্ধদিবস ও পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবেন শিক্ষকরা।

এরপরও দাবি আদায় না হলে আগামী ২৩ অক্টোবর মহাসমাবেশ করারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ। সভাপতিত্ব করেন, সংগঠনের আহবায়ক মো. আনিসুর রহমান। প্রধান সমন্বয়ক মো. আতিকুর রহমান আতিক। এছাড়া বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন, পরিষদের মুখপাত্র বদরুল আলম, রবিউল হাসান ও আব্দুস সবুর।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইসলাম তোতা, নীনি নির্ধরণী কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সরকার, সালেহা আক্তার, ইউএস খালেদা, আব্দুল খালেক, আব্দুল হক, শিবাজী বিশ্বাস, রোজেল সাজু, সিদ্দিকুর রহমান, আবুল কাসেম, সাবেরা বেগম, গাজীউল হক, নুরুজ্জামান আনসারী, কামরুল ইসলাম, মোজাম্মেলন হক, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন কুসুমসহ ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ।