১১তম গ্রেড: ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছে প্রাথমিক শিক্ষকরা

আন্দোলনরত শিক্ষকরা
আন্দোলনরত শিক্ষকরা  © ফাইল ফটো

সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে প্রাথমিকের শিক্ষকরা। বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল-আমীন।

তিনি বলেন, আগামীকাল আমরা বিকাল সাড়ে ৪টায় পল্টনস্থ মুক্তি ভবনে প্রগতি সম্মেলন কক্ষে প্রাথমিকের সকল সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে মতবিনিময় সভা করবো। সভা শেষে আমরা প্রাথমিকের সকল ক্লাস বর্জন করার ঘোষণা দিব। এর পরও যদি আমাদের দাবি মানা না হয় তাহলে আমরা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিতে বাধ্য হব।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষক হচ্ছে দেশ গড়ার কারিগর। অথচ এই শিক্ষকদের বেতন নিয়েই সরকার গড়িমসি করছে। অবিলম্বে ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা ক্লাস বর্জন করলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। যা আমরা চাই না। তাই সরকারের কাছে ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।

প্রাথমিকের বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে গ্রুপিং ছিল। তবে আমরা তা মিটিয়ে একসাথে আন্দোলেনে নামছি। আগামীকালের সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিকের সবগুলো গ্রুপের শিক্ষক প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। তাদের সাথে নিয়েই আমরা কর্মসূচী ঘোষণা করবো।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত ১৩ মে মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সহকারী শিক্ষক সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা বৈঠক করেন। সেখানে বেতন বৈষম্য নিরসন, শতভাগ পদোন্নতি, বিদ্যালয়ের সময়সূচি, চিত্তবিনোদন ভাতাসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় দাবি মানার আশ্বাস দিয়ে আন্দোলন না করার আহবান জানানো হয়।

তবে এখন ১২তম গ্রেড দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসায় ফের ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা। তারা ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৃথকভাবে আন্দোলন কর্মসূচিও পালন করেছেন। এছাড়া দাবি মানা না হলে বৃহৎ আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের মর্যাদাপূর্ণ গ্রেড প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। এটিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান ১৪তম গ্রেডের পরিবর্তে ১২তম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের পরিবর্তে দশম গ্রেডে উন্নীত করতে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে।

এ প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, শিক্ষকদের নতুন গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

গত ২৫ ফ্রেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এক রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে দিতে আদেশ প্রদান করেন। এর আগে সরকারের পরিকল্পনা ছিল প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড ঠিক রেখে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১২তমতে উন্নীত করা। প্রধান শিক্ষকরা দশম গ্রেড পাওয়ায় সহকারী শিক্ষকরা ১১তম গ্রেড দেওয়ার দাবি করছেন।


সর্বশেষ সংবাদ