প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় স্কুল ছাত্রীকে এসিড নিক্ষেপের হুমকি

  © টিডিসি ফটো

টানা ৬ মাস ধরে উত্ত্যক্তের শিকার স্কুল ছাত্রী থানায় জিডি করার পর তাকে এসিড ছুড়ে ঝলসে দেয়ার হুমকি দিয়েছে এক বখাটে। এ কারণে ভয়ে ছাত্রীটির স্কুল ও প্রাইভেটে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। জানা যায়, ওই বখাটে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। কিন্তু তার প্রেম ভালোবাসায় আসক্তি না থাকায় সে ওই ছেলেকে পাত্তা দেয়নি।

ছাত্রীটি সেখানকার আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়ছে। স্কুলে যাওয়া ও আসার পথে চরশ্রীরামপুর গ্রামের শফিক মিয়ার পুত্র শাহীন মিয়া মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছে। সপ্তাহখানেক আগে শাহীন কৌশলে ছাত্রীটির ছবি মোবাইলে ধারণ করে তা এডিট করে নিজের ছবির সাথে যুক্ত করে। পরে এই ছবি তার বন্ধু শান্তর ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করা হয়। মুহূর্তের মধ্যে আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে পড়ায় মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।

ছাত্রীটির বাবা-মা জানান, এখন আমি ও আমার ছেলে-মেয়ে বাহিরে মানসম্মানের ভয়ে বের হতে পারছি না। গ্রামের মানুষ নানান সমালোচনা করে। বিভিন্ন ইঙ্গিত দিয়ে কথা বলে। সামাজিক বিচার না পেয়ে থানায় জিডি করায় অভিযুক্তরা মেয়েকে এসিডে পুড়িয়ে দেয়া ও বাড়ি ঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে।

ছাত্রীটি জানায়, নান্দাইল মডেল থানায় জিডি করার পর শাহীন তাকে হুমকি দিয়েছে এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাকে এসিড মেরে সুন্দর মুখ পুড়ে দেয়া হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ছাত্রীটি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ফটোশপে কারসাজি করে শাহীন তার সাথে আমার ছবি লাগিয়ে দেয়। পরে তা শান্তর ফেসবুক আইডিতে অশ্লীল ছবি ছেড়ে দেয়ার লজ্জায় ইচ্ছে করছে মরে যেতে।

অভিযুক্ত বখাটে শাহীনের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মা নাজমা আক্তার ও চাচা কাজিম উদ্দিন জানান, থানা থেকে পুলিশ আসার খবর পেয়ে শাহীন ও তার বন্ধু শান্ত বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। তারা জানান, শাহীন মধুপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। শান্ত আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র। তারা একই গ্রামের বাসিন্দা।

এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন শনিবার ছাত্রীটির পরিবার ও অভিযুক্তদের ইউনিয়ন পরিষদে এক সালিশ ডেকেছেন বলে জানা যায়। চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন সালিশ ডাকার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সকাল ১০টার দিকে সালিশ বসবে।

জানতে চাইলে নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মিয়া বলেন, ইতিমধ্যে জিডির তদন্ত করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ