বিদ্যালয়ের মাঠে আখ ক্রয় কেন্দ্র, ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম

  © সংগৃহীত

আখ মিলের ক্রয়কেন্দ্রগুলোতে এখন চলছে মহা ব্যস্ততা। চাষিদের কাছ থেকে আখ কিনতে শুরু করেছে নাটোর সুগার মিল। ট্রাক্টর-ট্রলিতে ভরে নেওয়া হচ্ছে চিনিকলে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে নাটোরের হাজারো শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখা গেছে, চিনিকলের ক্রয়কেন্দ্র হওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা, শরীরচর্চা ও সমাবেশ করতে পারছেন না। রয়েছে দুর্ঘটনা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আখবাহী যানবাহন বিশৃঙ্খলভাবে চলাচল করছে বিদ্যালয়ের মাঠে। এতে ধুলায় আচ্ছান্ন হয়ে যায় চারপাশ।

নাটোর দরাপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাসুদেবপুর শ্রীশচন্দ্র বিদ্যালয় নিকেতনের দরাপপুর উচ্চ বিদ্যালয়, নলডাঙ্গা উপজেলার বুড়িভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুড়িভাগ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এবং  বিপ্রবেলঘড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে চলছে আখ কেনা কার্যক্রম।

বুড়িভাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সামাদ বলেন, ‘প্রতি বছরই মৌসুমের ছয় মাস বিদ্যালয়ের মাঠে আখ কেনা-বেচা চলে। এই সময় শিক্ষার্থীরা খেলতে পারেন না। গাড়ির কারণে বাচ্চাদের মনোযোগ নষ্ট হয়। অনেকে শিক্ষকের কথা খেয়াল না করে গাড়ির দিকে তাকিয়ে থাকে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।’

পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবদুল্লাহ আল-রাব্বী বলে, ‘শব্দের কারণে আমাদের মাথায় সমস্যা হয়। একটাই মাঠ, তাই এসবের মধ্যেই খেলাধুলা করি। কয়েকবার ছাত্র-ছাত্রীরা আহতও হয়েছে। একই কথা আরাফাত হোসেন, সুমি খাতুন, মিলি খাতুন, রাসেল হোসেন ও হুজাইফার।

বাসুদেবপুর শ্রীশচন্দ্র বিদ্যা নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াসিনুর রহমান বলেন, ‘আমরা মাঠে ক্রয়কেন্দ্র চাই না। স্থানীয় কৃষকদের অনুরোধে রাখতে হয়েছে। তবে শিগগিরই মিলকে চিঠি দেওয়া হবে।’

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি তৌহিদুর রহমান লিটন বলেন, ‘মাঠের কিছু অংশ মিলকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তাতে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সমস্যা হচ্ছে না। তবুও শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় আগামীতে আখ ক্রয় কেন্দ্র সরিয়ে নিতে জন্য মিল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো।’

নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘খেলার মাঠে প্রতিবন্ধকতা মেনে নেওয়া হবে না। শিক্ষর্থীদের স্বাভাবিক বিকাশে বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে সব আখ ক্রয়কেন্দ্র সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে নাটোর সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম জিয়াউল ফারুক বলেন, ‘দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের মাঠে নয়টি আখ ক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হলে কেন্দ্রগুলো সরিয়ে ফেলব।’


সর্বশেষ সংবাদ