ঢাবি বসন্ত উৎসবে ছাত্রলীগের চাঁদা দাবি!

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বসন্ত উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পাশে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যে ‘ভালোবাসার মাতৃভাষা উৎসব’ অনুষ্ঠানে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ।

জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাবিতে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিকেন্দ্রিক কয়েকটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে ‘ভালোবাসার মাতৃভাষা উৎসব ২০২০’ উদযাপন অনুষ্ঠানে সাজসজ্জা চলছিল। ওইদিন রাতে ছাত্রলীগের নেতারা অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক সানোয়ারুল হক সনি ও ইভেন্ট অ্যাক্টিভিস্টরা প্রোগ্রামের জন্য কার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে তার কারণ জানতে চান এবং এ প্রোগ্রামের বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক জানে কি না তা জিজ্ঞাসা করেন। তারা না বললে তাদের গত বছরের পহেলা বৈশাখের কথা মনে করিয়ে দেন।

ছাত্রলীগের এমন হুমকির মুখে অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক সনি ইভেন্ট ম্যানেজারকে চলে যেতে বললে তারা অনুষ্ঠান গোছানোর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পরে সকাল বেলা প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের আশ্বাসে তারা অনুষ্ঠান ফের গোছানোর কাজ শুরু করে।

এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক সানোয়ারুল হক সনি গণমাধ্যমকে বলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামস-ই নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন, নাজমুল সিদ্দিকী নাজ, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহ জালাল, বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমানসহ কয়েকজন নেতা আমাদেরকে অনুষ্ঠান করতে কার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি তা জানতে চান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে আমরা অনুমতি নেয়ার কথা জানিয়েছি।

কিন্তু তারপর তারা বলেন, জয়-লেখককে জানিয়েছি কি না। আমি বলি, জানাতে চেষ্টা করেছি কিন্তু জানাতে পারিনি। তারপর শামস-ই নোমান ভাই আমাকে বলেন, অনেক টাকার প্রোগ্রাম তো, তাদেরকে খুশি করে দাও। তখন আমি বলি ভাই, এটা স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করছি। আমাদের হাতে কোনো টাকা নেই। এ কথা শোনার পর ছাত্রলীগের নেতারা আমাকে বলে, পহেলা বৈশাখের কথা মনে নাই? এখন পহেলা বৈশাখের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে পাবি। এসব কথা বলায় আমি তখন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টকে চলে যেতে বলি। পরে সকালে প্রক্টর স্যার ও সাদ্দাম ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে আবার কাজ শুরুর কথা বলি।

চাঁদা দাবি করার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বাংলালিংকের পোস্টার আর ব্যানার দেখে আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করতে যায় তারা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়েছে কি না। যখন না বলে তখন আমি তাদের বলি, পহেলা বৈশাখে তো এমন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে৷ আপনারা চলে যান অনুমতি নিয়ে আসেন। এর বাইরে আমি চাঁদাটাদা বা অন্য কিছু চাইনি।’

ছাত্রলীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল সিদ্দিকী নাজ বলেন, ‘বাংলালিংক কার পারমিশন নিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন লাগায়ছে, তার কারণ জানতে চাইছিলাম। তাদের কাছ থেকে কোনো চাঁদা চাইনি।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ওই প্রোগ্রামে সবগুলো সংগঠনের নাম থাকলেও সবগুলো সংগঠনকে তা জানানো হয়নি। নোমানসহ কয়েকজন তাদের এই বিষয়টি জিজ্ঞেস করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রাম হলে তা কারা করছে, সবাই জানে কিনা এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তারা জিজ্ঞেস করতেই পারে। জিজ্ঞেস করলে সেটি চাঁদাবাজি হয় কীভাবে তা আমার জানা নেই। চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’।


সর্বশেষ সংবাদ