মুক্তিযোদ্ধা খোকার শেষ ইচ্ছাটাও পূরণ হলো না

বিএনপি নেতা ও  ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা মৃত্যুর আগে শেষ ইচ্ছা প্রকাশ পোষণ করেছিলেন। কিন্তু তা আর পূরণ হলো না। রোববার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে বাবার শেষ ইচ্ছার কথা জানান ছেলে ইশরাকে হোসেন।

নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় আজ বেলা ১টার সময় তিনি ইন্তেকাল করেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন খোকা। ২৯ নভেম্বর ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১০ বছর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শাসনামলে ঢাকা মহানগরের মেয়র ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালের ১৪ মে মাসে সাদেক হোসেন খোকা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যান। সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ সময়কালে দেশে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি দুর্নীতি মামলা হয়। এর কয়েকটিতে তাকে সাজাও দেয়া হয়েছে।

রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক দোয়া অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব খোকার শেষ ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন। মুক্তিযোদ্ধা খোকার সেই ইচ্ছাটা পূরণ হওয়ার আগেই তিনি বিদায় নিলেন।

মির্জা ফখরুল খোকার শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেন, রোববার সকালে সাদেক হোসেন খোকার ছেলে আমাকে ফোন করে বলেছেন, তার বাবার ইচ্ছাটা সে পূরণ করতে চায়। তিনি যেন দেশে ফিরতে পারেন তার উদ্যোগ নিতে আমরা সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুলের সঙ্গেও একাধিকবার খোকা দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। কিছু দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান টুকুর সঙ্গে ফোন করে দেশে আসার আকুতির কথা জানিয়েছেন।

সেটি স্মরণ করে রোববার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খোকার জন্য দোয়া মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে যখন আমরা স্বৈরাচার ও একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করছি, তখন সাদেক হোসেন খোকাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে দেশের বাইরে রাখা হয়েছে। তিনি ক্যান্সার রোগে ভুগছেন। চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। আমি কয়েকবার তার সঙ্গে নিউইয়র্কে দেখা করেছি। প্রতিবারই তিনি আমাকে বলেছেন- যদি অসুস্থ না হতাম, তা হলে আমি দেশে গিয়ে জেলে যেতাম, মানুষের সঙ্গে থাকতাম।’

তিনি বলেন, সাদেক হোসেন খোকা আমাদের ও তার বন্ধুদের বলেছেন যে, ‘দেশের মাটিতেই যেন আমার কবর হয়’।

খোকার জীবনের শেষ ইচ্ছানুযায়ী অন্তিম সময়ে তাকে দেশে নেয়াও পরিবারের পক্ষে সম্ভব হয়নি। পাসপোর্ট না থাকায় দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। পরবর্তী সময়ে কী হবে, এ নিয়ে স্বজনরা বিভ্রান্তিতে আছেন।

ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ১৪ মে সপরিবারে নিউইয়র্ক চলে যান সাদেক হোসেন খোকা। তার পর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে একটি বাসায় দীর্ঘদিন ধরে থাকছিলেন বিএনপির এ নেতা।

ভিজিট ভিসার নিয়ম অনুযায়ী, ছয় মাস পর পর যাওয়া-আসা করে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বৈধ রাখার নিয়ম। ২০১৭ সালে খোকা ও তার স্ত্রী ইসমত হোসেনের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তারা নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন পাসপোর্ট পাওয়ার ব্যাপারে কনস্যুলেট থেকে কোনো সদুত্তর দেয়া হয়নি।

 


সর্বশেষ সংবাদ