কাউন্সিল স্থগিতে দাবার গুটি উল্টে যেতে পারে ছাত্রদলে

  © লোগো

শেষ মুহুর্তে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল স্থগিতাদেশ সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের হিসেব নিকেশ পাল্টে দিচ্ছে। আগামী শনিবার কাউন্সিল হলে যারা সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে অগ্রগণ্য ছিলেন তারা বাদ পড়ে যেতে পারেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েকমাস তৃণমূল চষে বেড়ানো নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের সাজানো বাগান নষ্ট হয়ে যাবে। উল্টে যেতে পারে বিএনপির এবং  ছাত্রদলের কয়েকজন সাবেক নেতা দাবার গুটি। শীর্ষ নেতৃত্বে নতুন মোড় নিতে পারে সংগঠনটিতে। 

জানা গেছে, আগামী শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ছাত্রদলের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল। ইতোমধ্যে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। শেষ মুহুর্তে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণাও ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে বৃহস্পতিবার ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমান উল্লাহর দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা জজ আদালত কাউন্সিল অনুষ্ঠানে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। এরই ফলে প্রার্থী ও কাউন্সিলররা হতাশ হয়ে পড়ছেন। একইসঙ্গে দলটির একটি অংশ ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে’ নেমে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা। নতুন পরিস্থিতিতে ইতোমধ্যে প্রার্থীতায় অযোগ্য সাবেক ছাত্রদল নেতারা নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। 

কয়েকজন প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মামলা দায়ের করা ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমান উল্লাহর সঙ্গে ঘণিষ্ঠ সর্ম্পক রয়েছে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদ্য বিলুপ্ত কমিটির এক শীর্ষ নেতার। ‘বিবাহিত হওয়ায়’ ওই নেতার প্রার্থীতা বাতিল হয়। এছাড়া প্রার্থীতা বাতিল হওয়া বা প্রার্থীতা করতে না পারা আরও কয়েকজন নেতা গত কয়েক দিন ধরে কাউন্সিল স্থগিত করার চেষ্টা করছিলেন। ছাত্রদলের কয়েকজন সাবেক নেতা এতে সহযোগিতা করেন। সেই চেষ্টা-সহযোগিতার পথ ধরেই আদালতের মাধ্যমে কাউন্সিলে স্থগিতাদেশ দেয়া হলো। 

কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট দুইটি বিষয়কে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে সিভিল মামলা দায়ের করেন বাদী আমান উল্লাহ। এতে যুক্তি দিয়ে বলা হয়, প্রেস রিলিজ দিয়ে পুরনো কমিটি বিলুপ্ত করা আরপিও এবং বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বেআইনি। দলের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ছাত্রদলের কাউন্সিলের কার্যক্রম স্থগিত চান তিনি। এই যুক্তি আমলে নিয়ে আদালত কাউন্সিল স্থগিত করে শোকজ নোটিশ দিয়েছে। 

তবে বিএনপির এক নেতা বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর নাম করে প্রকাশ্যেই দেয়া হয়। তাদের কমিটি গঠন ও ভাঙন সংক্রান্ত নানা সংবাদ পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছে। সেটিতে কেউ নজর দেয়নি। মূলত:  দলের একটি বিপথগামী অংশ বিএনপির বিরোধীপক্ষের সঙ্গে মিলে ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব গঠন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতেই আদালতের মাধ্যমে এ স্থগিতাদেশ দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। 

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সুষ্ঠু সুন্দর ও গণতান্ত্রিক পন্থায় ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচন নস্যাৎ করতেই সরকারের নির্দেশে এই আদেশ। এটি আওয়ামী সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির আরেকটি অধ্যায় হয়ে থাকবে। এবার রাখঢাক করে নয়, বরং প্রকাশ্যেই আওয়ামী সরকার আদালতকে দিয়ে তাদের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির চরিত্রটি আবারও উন্মোচিত করলো। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কাউন্সিল বিষয়ে আজ শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সিনিয়র নেতারা বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। 


সর্বশেষ সংবাদ