২৪ ঘণ্টা পরও বহাল ‘বিতর্কিতরা’, দলীয় নেতাদের সাক্ষাৎ চান পদবঞ্চিতরা

  © ফাইল ফটো

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে থাকা ‘বিতর্কিতদের’ মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ার কথা জানিয়েছিল ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণে বুধবার রাতে ২৪ ঘণ্টার সময় নিয়েছিল তারা। কিন্তু সময় শেষে আরও ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়নি সংগঠনটি। এদিকে সময়সীমা পার হওয়ার পরও কেন ‘বিতর্কিতদের’ বাদ দেয়া হয়নি তা জানতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে দেখা করার কথা জানিয়েছেন পদবঞ্চিতরা।

তবে কমিটি থেকে ‘বিতর্কিতদের’ বাদ দিতে সময় ক্ষেপনকে সতর্কতা অবলম্বন বলে দাবি করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন,  ‘নিরপরাধ’ কারও সঙ্গে যেন ‘অবিচার’ না হয়, তার জন্য ‘বিতর্কিতদের’ বহিষ্কারে তাঁরা সময় নিচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী এখনো কেউ আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিক লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যাঁরা অভিযোগ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছেন; আইনের ছাত্র হিসেবে বলি—অভিযোগ যিনি করেন, অভিযোগকে সত্য প্রমাণ করার দায়িত্বটা তাঁরই। কিন্তু এটি কেউ করেনি।’

এর আগে ছাত্রলীগের কমিটি থেকে ‘বিতর্কিতদের’ বাদ দিতে বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন। পরে রাতে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ‘বিতর্কিতদের’ বহিষ্কারে ২৪ ঘণ্টা সময় নেন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

সংবাদ সম্মেলনে গোলাম রাব্বানী বলেছিলেন, ‘গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, বিবাহিত, অছাত্র, মামলার আসামিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত ১৭ জনের নাম আমরা প্রাথমিকভাবে পেয়েছি। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁদের বহিষ্কারের মাধ্যমে পদশূন্য ঘোষণা ক‌রে বঞ্চিতদের স্থান ক‌রে দেব।’

সম্মেলনের ১ বছর পর সোমবার ঘোষণা করা হয় ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এর আগে ১৫ দফা সময় দিয়েও তা ঘোষণা করা হয়নি। ফলে কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সর্বশেষ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অর্ধশত নেতার বাদ পড়া ও প্রত্যাশিত অনেকের পদ না পাওয়ায় সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। মধুর ক্যান্টিনে তা প্রকাশ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন পদবঞ্চিতরা। পরে কমিটিতে থাকা বিতর্কিতদের বাদ দেয়ার দাবিতে আন্দোলনে নামেন তারা।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ উদ্দিন বাবু বলেন, শতাধিক অভিযুক্তর মধ্যে কেন শুধু ১৭ জনের নাম এলো তা পরিষ্কার নয়। তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের নিয়ে বিতর্ক রয়েছে সেটি যেমন সত্য, এর চেয়েও বড় সত্য হল এর চেয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এমন অনেকের নাম তালিকায় আসেনি।

পদবঞ্চিতরা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে শনিবার তারা সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে মধুর ক্যান্টিনে ডাকসু ও ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের ওপর বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের হামলা, আলোচিত ১৭ জন এবং অন্য আরও ৮২ জনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইবেন তারা। ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়ে ৪৮ ঘণ্টা পরও কেন তাঁরা পদক্ষেপ নিচ্ছে না, আমরা জানতে চাইব’, বলেন তিনি।

 


সর্বশেষ সংবাদ