ছাত্রলীগের বাদ পড়তে যাওয়া ১৭ নেতার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ

  © ফাইল ফটো

ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় এক বছর পর ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়েছে। তবে এরপর থেকেই যেন বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। গত সোমবার কমিটি ঘোষণার পরপরই সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না-পাওয়া ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সংবাদ সম্মেলন করতে যান। এসময় পদ পাওয়া নেতা ও তাদের অনুসারীরা হামলা চালালে কয়েকজন নারীসহ অনেকে আহত হন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে উত্তেজনা শুরু হলে এবং পদ বঞ্চিতরা আন্দোলন শুরু করলে বিপাকে পড়েন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এমনকি বিতর্কিতদের কমিটিতে স্থান দেওয়ায় কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন তারা।

এর ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার দুপুরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে গণভবনে ডেকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

পরে রাত ১২টার দিকে অভিযোগের সত্যতা যাচাই-বাছাই করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া তারা ১৭ অভিযুক্তের নাম প্রকাশ করেছেন। তাদের সবাই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরমধ্যে মাদকসেবী ও মাদক মামলার আসামী, চাকরিজীবী, বিবাহিত, খারাপ আচরণকারী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চেতনা ধারণ করা, বয়স পার হওয়া নেতা রয়েছে।

ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, ছাত্রলীগ নেতা আরেফিন সিদ্দিকি সুজন ও আতিকুর রহমান খানের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। আর শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে বরকত হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে। কমিটিতে স্থান পেলেও বয়সসীমা পার হয়েছে সুরঞ্জন ঘোষ ও তানজীল ভূঁইয়া তানভীরের।

সংগঠনের নীতি বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুতের বিরুদ্ধে। মাহমুদুল হাসান তুষার মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে চেতনা ধারণ করেন বলে অভিযোগ। এছাড়া পরিবারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে তৌফিক হাসান সাগরের বিরুদ্ধে।

কমিটিতে স্থান পাওয়া আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নামে মামলা রয়েছে। চাকরি করছেন আহসান হাবীব। এছাড়া কমিটিতে পদ পাওয়াদের মধ্যে বিবাহিত বলে অভিযোগ এসেছে সাদিক খান, সোহানী হাসান তিথি, রুশি চৌধুরী, মুনমুন নাহার বৈশাখী এবং আফরিন লাবণীর বিরুদ্ধে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ অভিযোগগুলো এসেছে জানিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ২৪ ঘণ্টায় অভিযুক্তদের কেউ অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে পারলে তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। এর স্থালে যোগ্যতা অনুযায়ী বঞ্চিতদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

তবে এর বাইরেও অনেকের বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ রয়েছে বলে খোদ ছাত্রলীগ নেতাদের অনেকেই দাবি করেছেন। অধিকাংশের বিরুদ্ধেই মাদক সংশ্লিষ্টরার অভিযোগ তুলছেন তারা। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এটি নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন অনেকে।

আরো পড়ুন: ছাত্রলীগ নেতাদের বিয়ে, চাকরির দালিলিক প্রমাণ প্রকাশ্যে


সর্বশেষ সংবাদ