ঢাবি ছাত্রী সাহারা খাতুনের বর্ণাঢ্য জীবন

  © ফাইল ফটো

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২৫ মিনিটে থাইল্যান্ডের বামুনগ্রাড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

১৯৪৩ সালের ১ মার্চ ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ঢাকার কুর্মিটোলায় জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। ইন্টারমেডিয়েট পাশ করার পর তিনি জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) বি.এ-তে ভর্ত্তি হন। বি.এ (ফাইনাল) পরীক্ষার সময় অসুস্থ থাকার কারণে এক বিষয় পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী মাধ্যমে ২য় শ্রেণিতে বি.এ (ডিগ্রি) অর্জন করেন।

তারপর সেখান থেকে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। সাহারা খাতুন ছাত্র জীবনেই রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬৯ সনে আওয়ামী লীগের মহিলা শাখা গঠিত হলে তিনি তাতে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু করেন।

রাজপথের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন সরব। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, আইয়ুব-ইয়াহিয়া বিরোধী আন্দোলন, দেশ স্বাধীনের আন্দোলন, ৭৫’র পর অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরশাসক এরশাদবিরোধী আন্দোলন এবং খালেদা জিয়ার নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সক্রিয় আন্দোলন করেছেন রাজপথে। রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে হরতাল, সভা-সমাবেশ করতে গিয়ে একাধিকবার গ্রেফতার এবং নির্যাতিত হয়েছেন।

আইনপেশায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগের বহ সংখ্যক নেতাকর্মীর মামলা বিনাপয়সায় লড়েছেন। যারা আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন তারা জানতেন জামিনের জন্য অ্যাডভোকেট সাহারাসহ আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা আছেন। আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের কাছে ভরসার জায়গা ছিলেন অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। এমনিভাবে সারাজীবনের আইনপেশায় তিনি আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীর পেছনে লড়েছেন এবং তাদের জেল থেকে মুক্ত করেছেন।

২০০৮ সনের ২৯ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে জয় লাভ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে তাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ২০১২ সালে তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সনের ৫ জানুয়ারীতে তিনি পুনরায় পুনরায় ঢাকা-১৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক মহিলা আইনজীবী সমিতি ও আন্তর্জাতিক মহিলা জোটের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে একজন আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করতেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে ২০০৯ সালের সময় বিডিআর বিদ্রোহ শুরু হলে তিনি তৎকালীন বিডিআর’র বিদ্রোহী সৈনিকদের আত্মসমর্পণ করতে উৎসাহীত করেন ও অস্ত্র জমা দিতে বলেন।


সর্বশেষ সংবাদ