বাংলা চ্যানেলে প্রথমবার ‘ডাবল সাঁতার’ দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড সেই নাসরিনের

  © টিডিসি ফটো

এক নয়, দুই দুইবার (ডাবল) বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে নারীদের মধ্যে রেকর্ড করেছেন ভারতীয় নারী সাঁতারু তাহরিনা নাসরিন। টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ জেটি থেকে সেন্টমার্টিন জেটি পর্যন্ত ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের স্রোতোধারাটির নাম বাংলা চ্যানেল। রবিবার এই পথ দুবার পাড়ি দেন নাসরিন। এই প্রথম কোনো নারী এই পথে ডাবল সাঁতার দিয়েছেন।

এর আগে নাসরিন ২০১৫ সালে বিশ্বের প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেন এবং ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর ৩ ঘন্টা ৯ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে নারীদের মধ্যে দ্রুততম সাতারু হিসেবে বাংলা চ্যানেল সিঙ্গেল ক্রস (১৬.১ কিমি) পাড়ি দিয়ে রেকর্ড করেন। ভবিষ্যতে তিনি শিশুদের জন্য সাঁতার প্রশিক্ষণ একাডেমি খুলবে বলে জানান।

২৫ বছর বয়সী এই নারীর জন্মস্থান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায়। তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করেন। বর্তমানে তিনি কলকাতার আয়কর দপ্তরে চাকরি করছেন। এবার তাঁর সঙ্গে আছেন বাবা শেখ আফসার আহমেদ।

২০০৬ সালের ১৪ জানুয়ারি বাংলা চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয়। এ চ্যানেলটি ‘বাংলা চ্যানেলে’র আবিষ্কারক প্রয়াত আলোকচিত্রী কাজী হামিদুল হক। বাংলা চ্যানেল সাঁতরে পাড়ি দিতে কয়েক দিন আগে বাংলাদেশে এসেছেন নাসরিন। গত বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার সেন্টমার্টিনে অনুশীলন করেন ভারতীয় এই নারী সাঁতারু। রবিবার সকাল ৬টা ১২ মিনিটে সেন্টমার্টিন জেটি প্রান্ত থেকে সাঁতার শুরু করেন ২৫ বছর বয়সী ভারতের দূরপাল্লার সাতারু তাহরিনা নাসরিন। তিনি ৩ ঘন্টা ৪৭ মিনিট সময় নিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে সাগরে সাঁতরে টেকনাফ প্রান্তে পৌঁছান। টেকনাফ প্রান্তে ছুঁয়ে পুনরায় টেকনাফ হতে সেন্টমার্টিনে ৪ ঘন্টা ২৬ মিনিট সময় নিয়ে সাতরে ফিরে আসেন বেলা ২টা ২৫ মিনিটে। কোনো সমুদ্রের চ্যানেলে এ ধরনের সাঁতারকে বলা হয় ডাবল ক্রস।

সে হিসেবে, তাহরিনা নাসরিন বাংলা চ্যানেলে প্রথম নারী হিসেবে ডাবল ক্রস (৩২.২ কি,মি) সাঁতারটি সম্পন্ন করেন মাত্র ৮ ঘন্টা ১৩ মিনিটে। বাংলা চ্যানেলের রেকর্ড বুক বলছে, এর আগে ২০১৮ সালের ২৭ মার্চ ভারতের ছেলে সাতারু সাম্পান্না রমেশ সেলার ৯ ঘন্টা ১০ মিনিটে একমাত্র সাতারু হিসেবে ডাবল ক্রস পাড়ি দিয়েছিলেন। রবিবার প্রথম নারী সাতারু হিসেবে তাহরিনা নাসরিন ডাবল ক্রস সাঁতারে এবার রেকর্ড করলো বাংলা চ্যানেলে।

এভারেস্ট একাডেমির আয়োজনে তাহরিনা নাসরিনের এই সাঁতার অভিযানের শুরু থেকে সব কিছুরই নির্দেশনা দিয়ে পাশে থেকেছেন তার বাবা শেখ আফসার আহমেদ। যিনি একাধারে নাসরিনের সাঁতার প্রশিক্ষক ও মেন্টর। সুইম বাংলা চ্যানেল সাঁতারটিতে রেফারির দায়িত্ব পালন করেন ফিফা রেফারি তোফাজ্জল হোসেন বাচ্চু ও নেভিগেটর ও সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন রাফাহ উদ্দিন সিরাজী এবং সহযোগিতায় ছিলেন নর্থ আলপাইন ক্লাব বাংলাদেশ, ট্যুর অপারেটর হিসেবে এলিগ্রো ট্যুরস, মেডিকেল সাপোর্টে হেলদি হোম বাংলাদেশ এর ডা. মহসীন কবির লিমন, লাইফ গার্ড হিসেবে ছিলেন সিআইপিআরবি এর সি সেফ সুইমিং এর লাইফ গার্ড মো: কামাল, সাতারটির পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ফুটবল দলের ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম।