রবীন্দ্রনাথ বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত রূপকার: শিক্ষামন্ত্রী

  © টিডিসি ফটো

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৫৮ বছর আগে এবং প্রয়াতও হয়েছিলেন প্রায় ৮০ বছর আগে। তারপরও আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে তিনি ভীষণ প্রাসঙ্গিক। আমাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-অনুভূতিতে তিনি নিত্য বিরাজমান। সাহিত্যের এমন কোন শাখা নেই যেখানে রবীন্দ্রনাথের পদচারণা ছিল না। তিনি লিখেছেন, তিন হাজারের বেশি গান, এঁকেছেন দুই হাজারের বেশি চিত্রকর্ম। সৃষ্টিপ্রয়াসে তিনি নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী। রবীন্দ্রনাথ বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত রূপকার।

বুধবার বিকালে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জাতীয় পর্যায়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. দীপু মনি বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্যাসিবাদের ক্রমাগত ঔদ্ধত্যে রবীন্দ্রচিত্তে তুলেছিল আলোড়ন। রবীন্দ্রনাথ সাম্প্রদায়িকতা, সংকীর্ণতা ও উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। তিনি ছিলেন মানবতার অগ্রপথিক। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নিসর্গ প্রকৃতি তাঁকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করেছিল। তার সৃষ্টিশীল জীবনের বড় একটি অংশ কেটেছে এ বাংলার মাটিতে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গত শতকের পঞ্চাশের দশকে রবীন্দ্রনাথ রচিত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানকে আমাদের জাতীয় সংগীত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তা বাস্তবায়ন করেন।

তিনি বলেন, আমাদের এমন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা উচিত যা শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে ভূমিকা রাখে। যান্ত্রিক ও প্রাণহীন শিক্ষার বদলে আমরা চাই আনন্দময় শিক্ষা যা রবীন্দ্র শিক্ষা চেতনার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, আমরা কেবল শিল্প-সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে পাচ্ছি। কিন্তু তিনি তার চেয়েও অনেক বড় মাপের ব্যক্তিত্ব। তার সমাজ ভাবনা, পল্লী উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ঋণ, কৃষি ভাবনা প্রভৃতি থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত যা এ যুগেও সমানভাবে প্রযোজ্য।

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি‘র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, লেখক, গবেষক ও সংগঠক অধ্যাপক সনজীদা খাতুন। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র স্মারক বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর ট্রাস্টি মফিদুল হক। স্বাগত বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি।

সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বরেণ্য ব্যক্তিদের জীবনে কমবেশি অভিমান থাকে। মায়ের সান্নিধ্য তেমন পাননি বলে রবীন্দ্রনাথের একটি অভিমান ছিল। কেননা তখন ঠাকুরবাড়ির রেওয়াজ ছিল ধাত্রীদের মাধ্যমে সন্তানদের লালন-পালন। 


সর্বশেষ সংবাদ