আল মাহমুদের মরদেহে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

কবি আল মাহমুদের মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নেয়া হয়
কবি আল মাহমুদের মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নেয়া হয়  © সংগৃহীত

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে কবি আল মাহমুদের মরদেহে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। শনিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে একাডেমির নজরুল মঞ্চে তার মরদেহ রাখা হয়। সেখানে কবিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন কবি, সাহিত্যিকসহ সর্বস্তরের মানুষ।

বাংলা একাডেমিতে কবির মরদেহ আনার পর সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। এসময় কবি নুরুল হুদা, কবি আব্দুল হাই শিকদারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে কবির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় প্রেসক্লাবে। সেখানে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে টেনিস গ্রাউন্ডে তার প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘ক‌বি আল মাহমুদ ছি‌লেন দে‌শের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। দে‌শের সর্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য যে মহান স্বা‌ধীনতা যুদ্ধ হ‌য়ে‌ছে, সেখানে তাঁর গুরুতপূর্ণ অবদান র‌য়ে‌ছে।‌ তি‌নি এই সমাজকে নি‌য়ে যে স্বপ্ন দে‌খে‌ছি‌লেন, তাঁর সে স্বপ্ন পূরণ হোক।’

‌তি‌নি আরও ব‌লেন, ‘বর্তমান সমা‌জে ক‌বি আল মাহমুদ‌কে সবচে‌য়ে বে‌শি প্র‌য়োজন ছি‌ল। আল্লাহ তা‌কে সর্বোত্তম স্থান দান ক‌রুন, সবাই সেই দোয়া ক‌রি।’

কবি আল মাহমুদের ছেলে মীর মোহাম্মদ মুনির ব‌লেন, ‘উনার ইচ্ছা ছিল শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করবেন। আল্লাহ উনার ইচ্ছা পূরণ করেছেন। এসময় জানাযা নামাজে উপস্থিতদের উদ্দেশ্যে তিনি বরেন, কবি অজান্তে কোনও ভুল করে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘উনার মতো কবি সাধারণত সবসময় সব জায়গায় জন্ম নেননি। প্রতিটি ধারাতেই ওনার উপস্থিতি আমরা দেখেছি। এতে আমরা অভিভূত হয়েছি, অনুপ্রাণিত হয়েছি। সেই অনুপ্রেরণাটুকু উনি রেখে গেছেন আগামী প্রজন্মের জন্য।’

জানাযার নামাজে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, কবি আবদুল হাই শিকদার, শহিদুল ইসলাম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

পরে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। সেখানে বাদ যোহর কবির দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের মানুষ তার জানাযায় অংশগ্রহণ করে। জানাজা শেষে কবির মরদেহ মগবাজারের বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আগামীকাল  (রবিবার) বাদ জোহর তৃতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হবে গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌরাইলের মোল্লাবা‌ড়ি‌তে এবং সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।

কবি আল মাহমুদের সহকারী আবিদ আজম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পা‌রিবা‌রিক সিদ্ধান্ত অনুসা‌রে ক‌বি আল মাহমুদ‌কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌরাইল মোল্লাবা‌ড়ি‌তে পৌত্রিক কবরস্থা‌নে দাফন করা হ‌বে।

এদিকে, আল মাহমুদের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য অনুমতি চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের কাছে আবেদন করেছেন কবি পরিবারের সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, তারা অনুমতির জন্য এসেছেন। উপাচার্য এখনও সিদ্ধান্ত জানাননি।

শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কবি আল মাহমুদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।


সর্বশেষ সংবাদ