তেজস্বী ছাত্রনেতা থেকে যেভাবে রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ হয়ে উঠেন দাদা ভাই

  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ খ্যাত সিরাজুল আলম খান (দাদা ভাই) আর নেই। নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার (৯ জুন) দুপুরে তার মৃত্যু হয়। দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়ে আসা চিরকুমার সিরাজুল আলম খান ঢাকার কলাবাগানে ভাইদের সঙ্গেই থাকতেন।

১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়। তিনি কখনও নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শক হিসেবে তাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিত। তাকে সবাই ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকতেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে ষাটের দশকের প্রথমার্ধে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার ‘নিউক্লিয়াস’ গঠিত হয়। পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এই ছাত্রনেতারা।

কে এই সিরাজুল আলম খান
বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সাবেক ছাত্রনেতা ও রাজনীতিবিদ। তিনি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে গোপন সংগঠন ‘নিউক্লিয়াস’ গঠন করেন। নিউক্লিয়াস ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ নামেও পরিচিত। এছাড়াও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ গঠন এবং ‘৭ নভেম্বর ১৯৭৫’ এর নেপথ্য পরিকল্পনাকারী ছিলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতিতে সিরাজুল আলম ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

জন্ম ও শিক্ষা
সিরাজুল আলম খানের জন্ম নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার আলীপুর গ্রামে, ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি। তার বাবা খোরশেদ আলম খান ছিলেন স্কুল পরিদর্শক। মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুন, গৃহিণী। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। স্থানীয় স্কুলে কিছুদিন লেখাপড়া করে চলে যান বাবার কর্মস্থল খুলনায়। ১৯৫৬ সালে খুলনা জিলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাস করেন। তারপর ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৫৮ সালে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন। থাকতেন ফজলুল হক হলে। গণিতে স্নাতক ডিগ্রি নেয়ার পর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় ‘কনভোকেশন মুভমেন্টে’ অংশগ্রহণ করার কারণে। প্রতিদিন রাত করে হলে ফিরতেন। ফলে হল থেকেও একবার বহিষ্কৃত হন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করায় তার পক্ষে মাস্টার্স ডিগ্রি নেয়া সম্ভব হয়নি।

১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৬৩ সালে সিরাজুল আলম খান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। জাতীয়তাবাদী চেতনাকে বিকশিত করে বাংলাদেশীদের স্বাধীন জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ’৬২ সালে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে যে নিউক্লিয়াস গড়ে উঠে তিনিই ছিলেন তার মূল উদ্যোক্তা। এই নিউক্লিয়াসের সদস্য ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তারপর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত এই নিউক্লিয়াসের মাধ্যমে সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। ছয় দফার সমর্থনে জনমত গঠনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন সিরাজুল আলম খান। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষে স্বাধীন স্বদেশ ভূমিতে ফিরে আসলে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন প্রশ্নে মতভেদ দেখা দেয়। ফলে তার সিদ্ধান্ত ও তৎপরতায় গঠিত হয় নতুন রাজনৈতিক দল জাসদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং পরবর্তীকালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৬৩-’৬৪ এবং ১৯৬৪-’৬৫ এই দুই বছর তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬২ সালের গঠিত নিউক্লিয়াস স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ নামেও পরিচিত ছিল। এটি গঠনের উদ্যোগে তাঁর প্রধান সহকর্মী ছিলেন আবদুর রাজ্জাক এবং কাজী আরেফ আহমেদ। ১৯৬২-’৭১ পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলন, ৬-দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার আন্দোলন, ১১-দফা আন্দোলন পরিকল্পনা ও কৌশল প্রণয়ন করে এই ‘নিউক্লিয়াস’। আন্দোলনের এক পর্যায়ে গড়ে তোলা হয় ‘নিউক্লিয়াসে’র রাজনৈতিক উইং বি.এল.এফ এবং সামরিক ইউনিট ‘জয় বাংলা বাহিনী’। স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে ‘জয় বাংলা’সহ সকল স্লোগান নির্ধারণ এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে “...এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” বাক্যসমূহের সংযোজনের কৃতিত্ব ‘নিউক্লিয়াসে’র। এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণে সিরাজুল আলম খানের ভুমিকা ছিল মুখ্য। ১৯৬৯-’৭০ সনে গণআন্দোলনের চাপে ভেঙে পড়া পাকিস্তানি শাসনের সমান্তরালে ‘নিউক্লিয়াস’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংগঠন করা হয় ছাত্র-ব্রিগেড, যুব-ব্রিগেড, শ্রমিক-ব্রিগেড, নারী-ব্রিগেড, কৃষক-ব্রিগেড, সার্জেন্ট জহুর বাহিনী। এদের সদস্যরা ভেঙে পড়া পাকিস্তানি শাসনের পরিবর্তে যানবাহন চলাচল, ট্রেন-স্টীমার চালু রাখা, শিল্প-কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখা এবং থানা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খ্লা রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করে। নিউক্লিয়াসের সদস্যদের দ্বারা এইসব দুরূহ কাজ সাম্পাদনের জন্য কৌশল ও পরিকল্পনাও ‘নিউক্লিয়াস’র।

১৯৭০-’৭১ সন নাগাদ বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) এর সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ হাজারে। এদের প্রত্যেকেই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে উন্নত সামরিক ট্রেনিংপ্রাপ্ত হন এবং ‘মুজিব বাহিনী’ নামে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অধীনস্থ ১১টি সেক্টরের পাশাপাশি ৪টি সেক্টরে বিভক্ত করে বিএলএফ-এর সশস্ত্র সংগ্রামের পরিকল্পনা ও কৌশল ছিল কেবল ভিন্ন ধরনের নয়, অনেক উন্নতমানের এবং বিজ্ঞানসম্মত। বিএলএফ এর চার প্রধান ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক এবং তোফায়েল আহমেদ। ১৯৭১ সনের ১লা মার্চ ইয়াহিয়া খান আকস্মিকভাবে নির্বাচিত পাকিস্তান জাতীয় উদ্বোধনী সভা স্থগিত ঘোষণার পরপরই ২রা মার্চ বাংলাদেশর প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত নির্ধারণসহ ৩রা মার্চ ‘স্বাধীনতার ইশতেহার’ ঘোষণার পরিকল্পনাও ‘নিউক্লিয়াসের। বাংলাদেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে এই দুটি কাজ ছিলো প্রথম দিকনির্দেশনা। আর এই দুই গুরুদায়িত্ব পালন করেন যথাক্রমে আ.স.ম আবদূর রব এবং শাজাহান সিরাজ। ১৯৭০ সনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের নির্বাচিত করার দায়িত্ব পালন করে বিএলএফ। নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণআন্দোলনে গড়ে ওঠা জনমতকে সাংবিধানিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে গণরায়ে পরিণত করার এই কৌশলও নির্ধারণ করে বিএলএফ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সানন্দে এই সিদ্ধান্ত মেনে নেন। আন্দোলন, নির্বাচন, সমান্তরাল প্রশাসন এবং আসন্ন সশস্ত্র সংগ্রামকে হিসাবে নিয়ে বিভিন্ন বাহিনী গড়ে তোলার কৃতিত্ব সিরাজুল আলম খানের।

জাসদ প্রতিষ্ঠা
১৯৭১ সনে স্বাধীনতার পর আন্দোলন-সংগ্রামের রূপ ও চরিত্র বদলে যায়। গড়ে ওঠে একমাত্র বিরোধী দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। ১৯৭৫ সনের ৭ই নভেম্বরে অনুষ্ঠিত 'অভ্যুত্থান’ বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে এক ঘটনা। জাসদ গঠন এবং ‘অভ্যুত্থান’ এর নেপথ্য পরিকল্পনাকারী ছিলেন সিরাজুল আলম খান। আর এই দুটি বৃহৎ ঘটনার নায়ক ছিলেন মেজর জলিল, আ স ম আবদুর রব এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু তাহের।

কারাভোগ
সিরাজুল আলম খান ভিন্ন ভিন্ন তিন মেয়াদে প্রায় ৭ বছর কারাভোগ করেন। কনভোকেশন মুভমেন্টের কারণে ১৯৬৩ সালের শেষদিকে গ্রেপ্তার হন। ১৯৭৬ সালে জিয়ার আমলে আবার গ্রেপ্তার এবং ১৯৭৯ সালে মুক্তি পান। ১৯৯২ সালে বিদেশ যাবার প্রাক্কালে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ২৪শে মার্চ সিরাজুল আলম খানকে গ্রেপ্তার করা হলে ৪ মাস পর হাইকোর্টের রায়ে মুক্তি পান।

শিক্ষা-গবেষণা
সিরাজুল আলম খানের বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী অঙ্ক শাস্ত্রে হলেও দীর্ঘ জেল জীবনে তিনি দর্শন, সাহিত্য, শিল্পকলা, রাজনীতি-বিজ্ঞান, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সমাজবিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, সংগীত, খেলাধুলা সম্পর্কিত বিষয়ে ব্যাপক পড়াশোনা করেন। ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের উপর গড়ে উঠে তার অগাধ পাণ্ডিত্য এবং দক্ষতা। সেই কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের ওশকোশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৬-’৯৭ সনে। আর্থ-সামাজিক বিশেষনে সিরাজুল আলম খানের তাত্ত্বিক উদ্ভাবন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়। মার্কসীয় ‘দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ’র আলোকে বাংলাদেশের জনগণকে শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবী হিসাবে বিভক্ত করে ‘রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক’ মডেল হাজির করেছেন সিরাজুল আলম খান।

চিরাচরিত পার্লামেন্টারি ধাঁচের ‘অঞ্চল ভিত্তিক’ প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি শ্রম, কর্ম, পেশায় নিয়োজিত সমাজ শক্তি সমূহের ‘বিষয় ভিত্তিক’ প্রতিনিত্বের ব্যবস্থা সংবলিত ‘দুই কক্ষ’ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন, ফেডারেল সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন, বাংলাদেশকে কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন এবং প্রাদেশিক সরকার গঠন, উপজেলা পর্যায়ে স্ব-শাসিত স্থানীয় সরকার পদ্ধতি চালু করার মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক আইন ব্যবস্থা ও শাসন কাঠামোর পরিবর্তে স্বাধীন দেশের উপযোগী শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মডেল উত্থাপন করেন তিনি। বাংলাদেশের অন্য জাতিসত্তাসমূহের স্বীকৃতির প্রয়োজনও তার চিন্তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশে শিল্পায়ন করার লক্ষ্যে প্রবাসীদের অর্থায়নে ‘উপজেলা শিল্প এলাকা’ এবং ‘পৌর শিল্প এলাকা’ গঠন করার তার প্রস্তাব ইতোমধ্যেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘মাইক্রো ক্রেডিট’ ব্যাংকিং ব্যবস্থা এবং ‘সামাজিক ব্যবসা’-এর সমর্থক তিনি। সিরাজুল আলম খান এখন দেশে-বিদেশে ‘রাজনৈতিক তাত্ত্বিক ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে পরিচিত।

তার দীর্ঘ ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য ছাত্র-যুব নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক এক বিষ্ময়কর ব্যাপার। রাজনৈতিক তত্ত্ব উদ্ভাবন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন মডেল প্রণয়নে তার প্রধান সহযোগীরা হলেন ড. জিল্লুর রহমান খান, প্রফেসর রাজিয়া আহমেদ এবং মহিউদ্দিন আহমদ।

ব্যক্তিগত জীবন ও মৃত্যু
ব্যক্তিগত জীবনে সিরাজুল আলম খান অবিবাহিত। আজ দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন


সর্বশেষ সংবাদ