অথচ ইংরেজি বলতে পারলেই আমরা বিরাট শিক্ষিত আর স্মার্ট!

  © সংগৃহীত

ভদ্রলোক যখন পরিষ্কার বাংলায় একটা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, আমার বেশ ভালো লাগছিলো শুনতে। কি সহজ-সরল কথা বলার ধরণ, দাঁড়ানোর ভঙ্গী। দেখে বুঝার উপায়ই নেই খানিক আগে তাকে এই বছরে অর্থনীতি'তে নোবেল দেয়া হয়েছে।

এমন না আমেরিকান এক্সেন্টে ইংরেজি বলছেন। তিনি তার মতো করেই ইংরেজি বলছেন। জিজ্ঞেস করা হয়েছে,

-নোবেল পুরষ্কার পাবার পর কেমন লাগছে?

ভদ্রলোক এমনভাবে উত্তর দিলেন, শুনে মনে হলো; পুরষ্কার পেয়ে তিনি ভীষণভাবে লজ্জিত! এই পুরষ্কারটা আরও অনেকেই পেতে পারত। অনেকের অবদান আছে।

আমি খেয়াল করেছি, তার কথা বলার ভঙ্গী। একজন সাধারণ বাঙালি যেভাবে দাঁড়িয়ে, খুব সঙ্কোচের সঙ্গে কথা বলে; তাকে দেখে তেমনই মনে হচ্ছিলো।

তিনি যে অর্থনীতির একজন বিখ্যাত অধ্যাপক; পুরো পৃথিবীজুড়ে অনেক আগে থেকেই তার অনেক নাম-ডাক; তিনি যে খানিক আগে নোবেল পেয়েছেন; সেটা না তার কথা বলার ধরণ, না তার চাল চলনে আমি বুঝতে পেরেছি। আমার তো মনে হলো, ঠিক পাশের বাড়ির একজন মানুষ।

নোবেল পুরষ্কার ঘোষণা করার পর আজ গভীর রাতে আমেরিকার এমআইটি একটা প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করেছিল। প্রায় ৫৩ মিনিটের ওই প্রেস কনফারেন্সটা আমি এর মাঝেই চার বার দেখে ফেলেছি।

দেখছিলাম আর ভাবছিলাম আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের কথা। এক বিয়ের অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে পরিচয়। ঠিক যেই মুহূর্তে তার সঙ্গে পরিচয়; ওই মুহূর্তে আমরা আসলে কথা বলছিলাম বিয়ের পাত্র-পাত্রী নিয়ে। তো ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচয় হতেই তিনি বললেন,

-আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

কেউ তার পেশাগত পরিচয় জানতে চায়নি; কিন্তু তিনি প্রথম কথাই বললেন এটা। এতটুকু বললেও হতো। এরপর তিনি বললেন,

-আমি অমুক জায়গায় অমুক কমিটিতে আছি, অমুক মন্ত্রীর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব, তমুক এলাকার এমপি তার বন্ধু ইত্যাদি।

তিনি ক্রমাগত বলতেই থাকলেন। তো, তিনি প্রথম পরিচয়েই কেন এসব বলছিলেন? এইসব বলে তিনি হয়ত আমাদের কাছ থেকে আলাদা একটা মূল্য পেতে চাইছিলেন।

আমার মনে আছে, সেবার সেলুনে গিয়েছি। বসে আছি চুল কাটাবো। সামনের জনের শেষ হলেই আমার পালা আসবে। আমি অপেক্ষা করছি। হঠাৎ দেখি এক ভদ্রলোক সেলুনে ঢুকলেন। স্বাভাবিক ভাবে'ই তিনি যেহেতু আমার পরে এসছেন, তার পালা আমার পরেই হবার কথা। অথচ নাপিত ভদ্রলোক আগের জনের চুল কাটা শেষ হবার পরেই আমাকে বললেন,

-আপনি একটু অপেক্ষা করেন, আমি এই স্যরের চুলটা কেটে দেই।

বেশ অবাক হলাম! ব্যাপারটা কি। নাপিত, ওই ভদ্রলোককে স্যার স্যার বলছে; আর আমাকে পারলে তুই-তকারি করে অবস্থা!

তো ওই ভদ্রলোকের চুল কাটা শেষ হবার পর আমার পালা। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম,

-আপনার তো উচিত ছিল আমার চুল আগে কাটানোর।

এরপর নাপিত বললেন,

-ভাই, উনি পুলিশ অফিসার। তাই আগে কেটে দিলাম।

সেলুনের একজন নাপিতের কি জানার কথা, সে কোন পেশায় কাজ করে? ওই নাপিত তো জানে না, আমি কি কাজ করি। আমি তো কোন দিন বলিওনি। তাহলে ওই পুলিশ অফিসার কেন বলতে গেলেন?

কারণ, তিনি তার পেশাগত পরিচয় দিলে আলাদা একটা ফায়দা পাবেন। আপনি বাংলাদেশের হাঁটে, মাঠে, ঘাটে; যেখানেই যান এই পরিস্থিতি দেখতে পাবেন! এইতো কয়দিন আগেই এক ছাত্র মারা গেল ফেরি পার হতে না পেরে। কারণ কি?

ওই ফেরি অপেক্ষা করছিল এক সচিবের জন্য! মাঝখান থেকে ওই ছাত্রের প্রাণটাই চলে গেল! আপনি যদি ভেবে থাকেন মানুষজন বাংলাদেশে বসেই এমন করছে, তাহলে ভুল। এই বাংলাদেশিরা বিদেশে এসেও এমনই করে বেড়াচ্ছে।

ইউরোপ-আমেরিকায় এসেও এদের স্বভাবের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। আমি যেই শহরে থাকি, সেই শহরেই থাকে এক ভদ্রমহিলাকে একদিন ফোন করলাম। ফোন করার কারণ, এক ছেলে এই শহর ছেড়ে চলে যাবে। আমি ভাবলাম সবাই মিলে বিদায় দিলে ছেলেটা হয়ত একটু ভালো বোধ করবে।

এই ভদ্রমহিলার স্বামী এই শহরেই একটা ভালো চাকরী করে। ভাবলাম এই পরিবারটাকে বলে দেখি, সবাই মিলে যদি এক সঙ্গে বসে কোথাও আড্ডা দেয়া যায় কিংবা এক সঙ্গে খাওয়া যায়, সেই সঙ্গে ওই ছেলেটাকেও বিদায় দেয়া গেল। আমার সঙ্গে এই পরিবার কিংবা এই মহিলার কোন রকম বিরোধ নেই। আমি বরং এদের পছন্দই করি! আমি ফোন দিলাম তাকে। তিনি ফোনের ওপাশ থেকে বলা নেই, কওয়া নেই, বলতে শুরু করলেন,

-আমি আর আমার স্বামী হচ্ছি এই শহরের সেরা। এক নাম্বার! আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড জানেন আপনি?

শুনে তো আমার চোখ কপালে উঠার যোগাড়! তিনি এভাবে কথা বলছেন কেন! এরপর তিনি আমাকে নানান সব বিষয়ে জ্ঞান দান করলেন। আমিও শুনলাম। তিনি আমাকে এও শেখালেন ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত। আরও নানান কিছু!

এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা। ‘আমি বিশাল কিছু’ এটা না ভাবলে আমাদের চলেই না। সেটা ভাবলেও হতো। বিরাট কিছু হতে গিয়ে আমরা ক্রমাগত অন্যদের ছোট করে বেড়াই।

বিদেশে তো এই ব্যাপারগুলো আরও প্রকট। কেউ ভালো চাকরী করে কিংবা কেউ হয়ত ব্যবসা করে ভালো গাড়ি কিংবা ভালো বাড়িতে থাকে; এই জন্য তাদের মাটিতে পা পড়ে না! অন্যদের তারা মানুষই মনে করে না।

কেউ হয়ত একটা পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়ে, কেউ হয়ত একটু কম নামকরা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ে; এই জন্য তাদের পাত্তা দেয়া যাবে না!

আর এতসব কিছু দেখে আপনি এদের এড়িয়ে চলবেন? এতেও ফায়দা নেই। এরপর তারা বলবে, সে ভাব নেয়! সেই সঙ্গে আপনার প্রসঙ্গে এমন কোন গুজব নেই; যেটা তারা ছড়িয়ে দেবে না! এই হচ্ছি আমরা বাংলাদেশি।

একবার এই শহরেই থাকা এক ছেলে আমাকে বলেছিল

-আপনি খুব আন-স্মার্ট।

আমি বললাম- কেন বলছ?

- আপনি সবার সঙ্গে সহজভাবে মেলামেশা করেন, সহজভাবে কথা বলেন। এইটা তো আসলে যায় না!

আমি ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম। অর্থাৎ সবার সঙ্গে সহজভাবে মেশাও যাবে না! নইলে আবার ব্যাক্তিত্ব থাকে না।

এই শহরেই আমার পছন্দের দুই এক জন মানুষ আছে। যেহেতু পছন্দ করি, ভালো লাগা কিংবা আবেগের একটা ব্যাপার আছে; তাই নিজেকে পুরোপুরিভাবে প্রকাশ করাই ভালো। ওপাশ থেকেও সেটাই ছিল। অন্তত আমার তেমনটাই ধারণা । তো মাঝে মাঝে কথা বলা, ফোন করা, মেসেজ করা, চ্যাট করা ছিল নিয়ম করে।

যেই না স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেল। ফোন করে খোঁজ নেয়া তো দূরে থাক, এমনকি মেসেজের উত্তর পর্যন্ত দেয়ার নাম নেই! ‘কেমন আছো?’ এই প্রশ্নের উত্তর পর্যন্ত দেয়ার প্রয়োজন বোধ করে না!

এই হচ্ছি আমরা বাংলাদেশিরা! আমি ভাবলাম ঘটনা কি? এমন করার কারণ কি? এরপর মনে হলো- খুব সহজ স্বাভাবিকভাবে মেলামেশার কারনে তার হয়ত মনে হয়েছে আমার কোন ব্যাক্তিত্ব নেই। তাই প্রশ্নের উত্তর দেবার মতো ভদ্রতারও প্রয়জন নেই।

আমরা বড়ই হচ্ছি এমন পরিবেশে। যেখানে আজকাল শুদ্ধ বাংলায় কথা বললে, আমরা ক্ষেত হয়ে যাই! অথচ এই সমাজই আবার শিক্ষা দেয়, ইংরেজি জানতে হবে। ইংরেজদের মতো করে ইংরেজি বললেই আমরা তাকে স্মার্ট মনে করি।

এইবার উত্তর গোলার্ধ, দক্ষিণ গোলার্ধ বলে যে একটা ব্যাপার আছে; এক গোলার্ধে শীতকাল হলে, আরেক গোলার্ধে গরম কাল থাকে, এর যে একটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে, সেটা জানার কোন দরকার নেই। অথচ ইংরেজি বলতে পারলেই আমরা বিরাট শিক্ষিত আর স্মার্ট!

আপনাদের জানিয়ে রাখি যেই ভারতীয় বাঙালি ভদ্রলোক নোবেল পেলেন, তিনি খুব শুদ্ধ বাংলায় কথা বলেন, এমনকি আজকের প্রেস কনফারেন্সেও বলেছেন এবং তিনি ইংরেজদের মতো করে ইংরেজি বলেন না। তিনি ভারতীয়দের মতো করেই ইংরেজি বলেন।

আমাদের শিক্ষা দেয়া হয় বড় হতে হবে, সফল হতে হবে, অনেক টাকার মালিক হতে হবে। এর জন্য দরকার হয় অন্য কাউকে ছোট করা যাবে। এতে কোন সমস্যা নেই। যখন টাকা পয়সার মালিক হয়ে যাবো কিংবা বড় একটা চাকরী করবো; সেই পদ পদবী দেখিয়ে অন্যদের কাছ থেকে সমুদয় সব কিছুতে ফায়দা নেব, আলাদা ভাব নেব।

যেই বাঙালি কাল নোবেল পেয়েছে, তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন, আমি জীবনে সফল হতে চাইনি, বড় হতে চাইনি; আমি স্রেফ আমার আগ্রহের কাজটা করে যেতে চেয়েছি; ভবিষ্যতেও তাই করবো।

বুয়েটে যেই ছেলেগুলো আবরারকে হত্যা করেছে; তারা কি মেধাবী না? তো, তারা কেন এই কাজ করল? একটা মানুষকে হত্যা করে বসলো?

কারণ এটাই আমাদের সমাজ। এই প্রজন্ম এটাই শিখে বড় হচ্ছে। এরা শর্ট-কাট ওয়েতে বড় হতে চেয়েছে। কারণ তারা জানে রাজনীতি করলে সম্রাটের মতো হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়া যাবে। সেটাও যদি না হয়, ভালো একটা চাকরি জুটিয়ে নেয়া যাবে।

এই দেশে নীতি-নৈতিকতা, জ্ঞানচর্চা, পড়াশুনা এই সব কোন কিছুরই আর দরকার নেই। ওই চর্চা টুকু'ই আমাদের নেই। আপনারা যারা খুব আক্ষেপ করছেন কলকাতা থেকে দুই দিন পর পরই বাঙালিরা নোবেল পাচ্ছে; এতো এতো ভালো কিছু করছে; আমরা পারছি না কেন?

দেখুন আমাদের পরিবেশটাই আমাদের এমন বানাচ্ছে। আমি আমার উদাহরণ দেই। আমার যত যা অর্জন, সেটা একাডেমীক কিংবা অন্য আর যে কোন অর্জন; সব কিছুই আমি অর্জন করেছি বেশ কিছু বছর আগে।

তিন বছর আগে দীর্ঘ ছয়-সাত বছর আমি বিদেশে থাকা কোন বাংলাদেশির সঙ্গে সেভাবে মেলামেশা করিনি। করেছি তো অবশ্যই। তবে হায়-হ্যালো টাইপ। খুব ভালোভাবে কারো সঙ্গে মেলামেশা করিনি। এই পুরো সময়টাই আমি আমার নিজেকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। পড়াশুনা করেছি, জ্ঞান অর্জন করার চেষ্টা করেছি। সব কিছু থেকে শেখার চেষ্টা করেছি। এর মানে বলছি না বিশাল বিশাল ডিগ্রি নিতে হবে। যে কোন কিছু থেকে'ই শিক্ষা নেয়া যায়, নিজেকে সমৃদ্ধ করা যায়।

তিন বছর আগে যখন সিদ্ধান্ত নিলাম, সবার সঙ্গে সহজ স্বাভাবিকভাবে মেলামেশা করবো; তখন নিজেকে সেভাবেই মানিয়ে নেবার চেষ্টা করেছি। তিন বছর পর এখন এসে দেখি, আমার না আছে কোন একাডেমিক অর্জন; না আমি এই তিন বছরে নিজেকে মেধা মনন কিংবা অন্য কোন কিছুতে সমৃদ্ধ করতে পেরেছি।

উল্টো আমার মনোজগতে মনে হচ্ছে একটা বিশাল পরিবর্তন চলে এসছে। আমি যেই মানুষ, জীবনে কখনো কারো সঙ্গে একটু উঁচু গলায় পর্যন্ত কথা বলিনি, সেই আমারই মনে হচ্ছে মেজাজ কিছুটা রুক্ষ হয়ে গিয়েছে!

গত তিন বছরে আমার আশপাশের বাংলাদেশিদের কাছ থেকে সব সময় শুনেছি কিভাবে টাকা রোজগার করতে হবে, কিভাবে বড়োলোক হওয়া যায়, কিভাবে একটা দামী ব্র্যান্ডের গাড়ি কেনা যায় (এরা আবার দামী ব্র্যান্ডের গাড়ি দেখলে ফিরে ফিরে তাকায়ও!)।

তো, এদের এইসব কর্মকাণ্ড দেখে আমার মাঝেও ইচ্ছে হয়েছে- বড়োলোক হওয়া দরকার, টাকা-পয়সার মালিক হওয়া দরকার, গাড়ি-বাড়ির দরকার আছে। অথচ আমি আমার পুরো জীবনে জাগতিক এইসব চাওয়া পাওয়া থেকে দূরে থাকতে চেয়েছি। একেই মনে হয় বলে সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে!

আমাদের পুরো পরিবেশটাই এমন। আপনি এখানে বুদ্ধিজীবী তৈরি করতে পারবেন না; বিজ্ঞানী তৈরি করতে পারবেন না। আপনি তৈরি করতে পারবেন কিছু চাকুরে আমলা কিংবা ব্যবসায়ী।

বাঙালি এই অধ্যাপকের গতকালের প্রেস কনফারেন্সেটা দেখে আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছি, আমি ভুল পরিবেশের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলাম। আমার আমিকে দ্রুতই খুঁজে নিতে হবে। যে কিনা কখনো কোন বস্তুগত চাওয়া-পাওয়ার পেছনে ছুটেনি; সব সময়ই জানতে চেয়েছে, শিখতে চেয়েছে; নিজেকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। কখনোই বড় হতে চায়নি। চেয়েছে বিনয়ের সঙ্গে ছোট হয়ে থেকে আরও বেশি কিছু জানতে।

আপনি যতদিন পর্যন্ত না সমাজে এই ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবেন, ততদিন পর্যন্ত অন্যদের জ্ঞানচর্চা আর তাদের উদ্ভাবন দেখে আমাদের হা-হুতাশ আর আক্ষেপ করে বেড়াতে হবে।

লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ