ট্রাম্পকে ভয়াবহতার কথা কমই বলেছেন প্রিয়া সাহা

  © সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে ৩.৭ মিলিয়ন সংখ্যালঘুকে গুম করে দেওয়ার মনগড়া তথ্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন প্রিয়া সাহা নামের এক প্রভাবশালী এনজিও কর্মী। দেশের হিন্দু সম্প্রদায়সহ বেশিরভাগ মানুষই এর বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছেন। দেশ এবং দেশের বাইরে প্রিয়া সাহার বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। যাতে যোগ দিয়েছেন খ্যাতিমান নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ট্রাম্পকে প্রিয়া সাহা যা বলেছেন, কমই বলেছেন। খুব মাপা সময়। ভয়াবহতা বর্ণনা করার সময় তাই পাননি। মিলিয়নকে লক্ষ ভেবেছেন নাকি মিসিংকে ডিস্যেপিয়ার্ড বলেছেন, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো হিন্দুদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বাংলাদেশে চলছে, চলছে বলেই ওরা দেশ ছাড়ে। এটি মানুষ জানুক। হাসিনা এসেও যে সংখ্যালঘুকে নিরাপত্তা দেননি, এটাও জানুক মানুষ।

এর কিছুক্ষণ পর আরেকটি স্ট্যাটাসে নির্বাসিতা এই লেখিকা লিখেন, হিন্দুর কথা হিন্দু ভাবে, মুসলমানের কথা মুসলমানরা ভাবে, খ্রিস্টানদের কথা খ্রিস্টানরা ভাবে, ইহুদিদের কথা ইহুদিরা ভাবে- এটা ভুল কথা। সেই হিন্দুরাই দেশের এবং দেশের বাইরের হিন্দুরা ভালো আছে না কি মন্দ আছে, এ নিয়ে ভাবে, যারা হিন্দু নিয়ে রাজনীতি করে, বা সরাসরি রাজনীতি না করলেও সেই রাজনীতি দ্বারা যাদের মগজধোলাই হয়েছে । একই রকম মুসলমানরাও, কোনও মুসলমানই মুসলমানের জন্য ভাবে না, যদি মুসলমান নিয়ে রাজনীতি না করে বা সেই রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত না হয়। একই রকম খ্রিস্টান ইহুদি বৌদ্ধ বাহাই রাও।

মানুষ নিজেকে নিয়ে ভাবে, নিজের স্বার্থ নিয়ে। ভালো থাকতে হলে, আরামে আহলাদে স্বছন্দে বা প্রাচুর্যে থাকতে হলে, যাদের সংগে সম্পর্কটা ভালো রাখতে হয়, তাদের সংগে রাখে, যাদেরকে খাতির করতে হয়, তাদের করে, তারা অন্য ধর্মের হলেও, অন্য জাতের হলেও, অন্য বর্ণের হলেও, অন্য বিশ্বাসের হলেও।

আমি হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, ইহুদি অনেককেই জিজ্ঞেস করে দেখেছি, তাদের সম্প্রদায় দেশে বা দেশের বাইরে দুঃখে কষ্টে আছে এ নিয়ে তাদের কোনও দুর্ভাবনা নেই। খুব অল্প সংখ্যক মানুষই সব মানুষকে নিয়ে ভাবে, সব মানুষের দুর্দশা ঘোচাতে চায়। সেই অল্প সংখ্যক মানুষের আসলে কোনও ধর্ম, বর্ণ, জাত থাকে না, তারা এসবের উর্ধে উঠে যায় বলেই উদার হতে পারে, নিঃস্বার্থ হতে পারে।