মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে ১১তম গ্রেডের বিকল্প নেই

সিঙ্গাপুরে একটা কথা প্রচলিত রয়েছে—‘যদি অর্থনীতিতে উদীয়মান বাঘ্র হতে চাও তবে প্রাথমিক শিক্ষায় বিনিয়োগ কর।’ এই কথাটি শুধু কাগজে-কলমে নয়, বাস্তবে প্রয়োগ করেছিল বলে আজকে সিঙ্গাপুর এত উন্নত। সিঙ্গাপুরের মাত্র ছয় বছর পরে আমাদের দেশ স্বাধীন হলেও আমরা সিঙ্গাপুরের চেয়ে এখনো অনেক পিছিয়ে। প্রাথমিক শিক্ষায় আমাদের দেশ অনেক কম বিনিয়োগ করে বলে মানসম্মত বেতন দিয়ে মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলাফলস্বরূপ মেধাবীরাও প্রাথমিক শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট হয় না।

তারপরও যেসব মেধাবী প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন, তাঁরাও পেশা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ও কর্মরত মেধাবী শিক্ষকদের যথাযোগ্য মূল্যায়ন না করার কারণে আমাদের দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান কাঙ্ক্ষিতমানে উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

প্রাথমিকে পাঠদানের গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকগণ; অথচ তাঁদের বেতন-পদমর্যাদা এত নিম্নমানের যে তাদের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আর্থিক অসচ্ছলতা থাকার কারণে সহকারী শিক্ষকরা ইচ্ছা থাকা সত্ত্ব্বেও পাঠদানে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে বিলিয়ে দিতে পারেন না। অনেকে বাধ্য হয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশির বিকল্প পেশায় আত্মনিয়োগ করেন। তাছাড়া এত নিম্ন বেতনে মেধাবীরা কখনো প্রাথমিক শিক্ষক হতে চাইবেন না।

অথচ মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের জন্য মেধাবী সহকারী শিক্ষক নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ এই যে, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের জন্য দ্রুত প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি ১১তম গ্রেড প্রদান করে পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হোক। এতে মেধাবীরা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক হতে উত্সাহিত হবেন এবং কর্মরত মেধাবী শিক্ষকরাও যথাযোগ্য মূল্যায়ন পেয়ে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের জন্য নিজেদের বিলিয়ে দেবেন।

লেখক: সহকারী শিক্ষক, ভীমদামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
ঝলঝলি, তেপুকুরীয়া, বোদা, পঞ্চগড়।


সর্বশেষ সংবাদ