ইংরেজি পরীক্ষা মানেই একটা আতংক!

  © সংগৃহীত

আমাদের ইংরেজি শেখা! ১২ বছরের কারিকুলাম, ২০০ মার্কস করে প্রতি বছর, তারপরেও ইংরেজি পরীক্ষা মানেই একটা আতংক। চারটা পাবলিক পরীক্ষায় ভিজিল্যান্স অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। সেই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় দেখেছি শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে দূর্বল, জেএসসি, এসএসসিতেও একই অবস্থা। আজকে এইচএসসি পরীক্ষার ইংরেজিতেও একই অবস্থা।

প্রথমেই বলে রাখি, ইংরেজি কোন জ্ঞান বা শিক্ষা নয়, বরং ইংরেজি হলো শিক্ষণের একটা মাধ্যম। ১২ বছর ধরে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা একটা ভাষা শেখাই, অথচ এই ১২ বছরে এই ভাষার মিনিমাম লেভেল আয়ত্ত করতে পারে খুবই অল্পসংখ্যক। বলা যায় আমাদের শিক্ষাজীবনের মোটামুটি একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ কোন ফল ছাড়াই ব্যয় হয়।

সেটা আরো প্রতীয়মান হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজিতে পাশ মার্ক ৩০ এর মধ্যে আট। যাদের আবেদনের যোগ্যতা থাকে তাদের ১০-১২% ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করে। ঢাকার নামকরা কয়েকটা স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা মিনিমাম লেভেলের ইংরেজিটা আয়ত্ত করতে পারে। এছাড়া বাকিদের অবস্থা মোটামুটি একই। দু’একজন ছাড়া।

ছয় মাসের কোর্স করে যেকোন ভাষার মোটামুটি লেভেলটা আয়ত্ত করা যায়। কঠিন ভাষা যেমন চাইনিজ ও জাপানিজ ভাষাও একবছরের মধ্যেই রপ্ত করা যায়। আর আমরা (আমাদের অধিকাংশ) ১২ বছর পড়ে ২০০ মার্ক এর প্রায় ৩৬ টি পরীক্ষা দিয়েও একটা ভাষার মিনিমাম লেভেলটা আয়ত্ত করতে পারিনা। তাহলে সমস্যাটা কোথায়?

আমি মনে করি, সমস্যাটা আমাদের কারিকুলামে, আমাদের শিক্ষাদান পদ্ধতিতে। বলতে হয় এটা একটা ফালতু কারিকুলাম। এর সাথে যুক্ত হয়েছে দক্ষ শিক্ষকের অভাব। একই রচনা, প্যারাগ্রাফ, দরখাস্ত সেই পঞ্চম শ্রেণী থেকে পড়া শুরু করে। এইচএসসি পরীক্ষায়ও সেই রচনা কমন পড়ে। আজকে একটা গ্রাফ বিশ্লেষণ আসছে দেখে ভাবলাম ভালো পদ্ধতি, পরে শুনলাম সেটাও হুবহু কমন পড়েছে।

এটা স্বীকৃত যে, ভাষা আগে মুখে আসতে হয়, পরে কলমে। এটাকে ভাষা হিসেবে না ধরে আমরা এটাকে জ্ঞান হিসেবে নিয়েছি। আমাদের কারিকুলাম পুরোপুরি সেরকমই। ইংরেজি ভাষা শেখার জন্য আমাদের ২০০ মার্কস এর কারিকুলাম পুরোপুরি নতুন করে সাজানোর সময় এসেছে।

লেখক: গবেষক ও ফ্রিল্যান্স রাইটার,
ইমেইলঃ fariddu100@gmail.com


সর্বশেষ সংবাদ