বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের অগ্রযাত্রা চলছেই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরেই আজ ‘নতুন-স্বাভাবিক সময়ে’ও বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুতের বাতি ও শিক্ষার আলো পৌঁছেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ঘরে তুলছে বাংলাদেশ। ঘরে বসেই সব কাজ করা যাচ্ছে অথচ আজ থেকে মাত্র ১০-১২ বছর আগেও অনেকে ডিজিটাল বাংলাদেশকে অলীক স্বপ্নই ভাবতেন। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাংলাদেশকে নিয়ে সুদূরপ্রসারী স্বপ্নগুলোই আজ বাস্তব।

দেশব্যাপী ৪জি ইন্টারনেট সুবিধার বিস্তৃতির কারণে করোনার এই দুঃসময়েও ঘরে বসেই অফিস এবং এমনকি আদালতের যাবতীয় কাজও চলছে। আগামী ৭ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও শুরু হতে যাচ্ছে অনলাইন ক্লাস। এই সবই ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল।

শিক্ষা খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে গত ১০ বছরে। বাংলাদেশের একটি বড় অর্জন হলো শিক্ষায় কিছু দৃশ্যমান সাফল্য। এই অর্জন এখন সারা বিশ্বে স্বীকৃত। আফ্রিকা বা অনগ্রসর দেশগুলো যখন শিক্ষায় ছেলেমেয়ের সমতা অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক দুই স্তরেই ছেলেমেয়ের সেই সমতা অর্জন করে ফেলেছে। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী, এখন প্রাথমিকে ছাত্রীদের হার প্রায় ৫১ শতাংশ, যা মাধ্যমিকে প্রায় ৫৪ শতাংশ।

১০ বছর আগেও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা মূলধারায় ছিল না, সেটি মূলত উচ্চমধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তের সন্তানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, ইংরেজি মাধ্যম বা কিন্ডারগার্টেনেই কেবল প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া হতো। এখন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের জন্য এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়েছে। স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পর ২০১০ সালে আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষানীতি পেয়েছি।

প্রাথমিকে ভর্তির হার প্রায় শতভাগ, ঝরে পড়া কমেছে অনেকাংশেই। প্রাথমিকের এক কোটি ৩০ লাখ শিশু উপবৃত্তি পাচ্ছে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরেও অর্জিত হয়েছে জেন্ডার সমতা। কারিগরি শিক্ষায় বর্তমানে শিক্ষার্থীর হার ১৪ শতাংশ। প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় চার কোটি শিশু বছরের প্রথম দিনে বিনা মূল্যে বই পায়। সাক্ষরতার হার ১০ বছরে বেড়ে হয়েছে ৭৩ শতাংশ। শিক্ষা অবকাঠামোতেও বিপ্লব সাধিত হয়েছে। বিনা মূল্যের বই, উপবৃত্তি, স্কুল ফিডিংসহ সরকারের নানা পদক্ষেপের সুফল মিলছে এখন। বিশেষ করে বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে যাওয়ায় শিক্ষার প্রতি সবার আগ্রহ বেড়েছে।

এই শিক্ষার সুফল পাওয়া যাচ্ছে অন্যান্য ক্ষেত্রেও। কমেছে বাল্যবিয়ে, কমছে ঝরে পড়াও। প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ৪৮ শতাংশ থেকে কমে ২০ দশমিক ৯ শতাংশে এসেছে। শিক্ষা খাতে এত উন্নতির কারণেই সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। তবে সামনের চ্যালেঞ্জ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন। এখন প্রয়োজন শিক্ষার গুণগত মানের উন্নয়ন। এ ছাড়া ২০১৩ সালে একযোগে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে, যা বর্তমান সরকারের একটি অন্যতম অর্জন।

ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের প্রতিটি মানুষের খাদ্য, আশ্রয়, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে একটি সুখী ও উন্নত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন তিনি। তাঁর সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্য বিমোচনে বহুমাত্রিক কর্মসূচী বাস্তবায়নসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগসমূহের অন্যতম হলো ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’ প্রকল্পটি ইতোমধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনে টেকসই মডেল হিসেবে দেশ বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় গৃহীত কার্যক্রমের স্থায়িত্ব প্রদান ও দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইন- ২০১৪’ পাস হয়। উক্ত আইনের আওতায় গঠিত পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে।

২০২১ সালে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প শেষ হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে প্রকল্পের সকল কার্যক্রম, সম্পদ, দায় ইত্যাদি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে স্থানান্তরিত হতে থাকবে। করোনার এই সময়ে এই দেশের গরীব দুখীদের জন্য চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ১৭ মেট্রিক টন এবং আজ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন। এতে উপকারভোগী পরিবার সংখ্যা ১ কোটি ৬৭ লাখ ৭৪ হাজার এবং উপকারভোগী লোকসংখ্যা ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৩৩ হাজার। সাধারণ ত্রাণ হিসেবে নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৯৫ কোটি ৮৩ লাখ ৭২ হাজার ২৬৪ টাকা এবং বিতরণ করা হয়েছে ৯৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮৪ হাজার ১৬ টাকা। এতে উপকারভোগী পরিবার সংখ্যা ৯৯ লাখ ৫৭ হাজার এবং উপকারভোগী লোক সংখ্যা ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার। শিশু খাদ্য সহায়ক হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা এবং এ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে ২৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এতে উপকারভোগী পরিবার সংখ্যা ৮ লাখ ৪২ হাজার এবং উপকারভোগী লোকসংখ্যা ১৭ লাখ ৫৮ হাজার ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের ৯৩ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আলো ব্যবহার করে। সৌর বিদ্যুতের আলো ব্যবহার করে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ আর ২ দশমিক ৯ শতাংশ বাতি জ্বালাতে এখনো কেরোসিনের ওপর নির্ভর করে। স্যানিটারি টয়লেট ব্যবহার করে দেশের ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। অন্যান্য ধরনের টয়লেট ব্যবহার করে ১৭ শতাংশ। মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ করে; যা বিশ্বের অনেক দেশই এখনো ত্যাগ করতে পারেনি। এসব ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশই বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল এবং শেখ হাসিনাকে উন্নয়নের পথপ্রদর্শক হিসেবে বেছে নিয়েছে।

বর্তমানে বিশ্বের ১৭৪টি দেশে এক কোটি বিশ লাখের অধিক অভিবাসী কর্মী কর্মরত রয়েছে। গত দশ বছরে পেশাজীবী, দক্ষ, আধা দক্ষ ও স্বল্প দক্ষ ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ৬৬ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে, যা এ পর্যন্ত মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৬০ শতাংশ। তার মধ্যে ২০১৯ সালে ৭ লাখের বেশি মানুষের বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। এমনকি বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের রেমিটেন্স আয় আগের অর্থ বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। শুধু জুনেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ১.৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়াও জুন মাসের শেষ আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৩৬.১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

গত অর্থ বছর থেকেই আওয়ামী লীগ সরকার বৈধ পথে পাঠানো রেমিটেন্সের অর্থের উপর ২ শতাংশ ক্যাশ ইনসেনটিভ ব্যবস্থা চালু করে। শুধু তাই না, এই বছরের মে মাস থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এই ক্যাশ ইনসেনটিভ পাওয়ার প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা অপরিসীম। তৃণমূলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেবা পৌঁছে দিয়ে কর্মসংস্থান বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে চায় সরকার। আর এ জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে দেশের সব ইউনিয়নে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছানোর কাজ শেষ পর্যায়ে।

২০২০ সালের মধ্যে গ্রামের ১০ কোটি মানুষ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আওতায় আসবে। আর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে দুই কোটি মানুষের। এ ছাড়া ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি পণ্য ও সেবা রপ্তানি করে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয় হবে। তৈরি পোশাকের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত হিসেবে আবির্ভূত হবে তথ্য-প্রযুক্তি খাত। ফলে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১ শতাংশের বেশি বাড়বে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, প্রতি এক হাজার নতুন ইন্টারনেট সংযোগ আটটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ১০ শতাংশ ব্রডব্যান্ডের বৃদ্ধি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে। সেটি নিশ্চিত করতে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে শ্রমনির্ভর অর্থনীতি থেকে জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মোকাবিলায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘ডিজিটাল সেবার বিস্তৃতি ও উন্নতি ঘটিয়ে বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছরে জাতিসংঘের ই-গভর্ন্যান্স উন্নয়ন সূচকে সেরা ৫০টি দেশের তালিকায় থাকবে। ই-গভর্ন্যান্সের জাতীয় ইনডেক্সে আমরা এখন ১১৫ নম্বরে আছি। আগামী পাঁচ বছরে আমরা আরও ৫০ ধাপ উন্নতি করে দুই অঙ্কের সংখ্যায় আসব, এমনই লক্ষ্যমাত্রা আমাদের।

বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়নে ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা অপরিসীম। অধিকতর গতিশীলতা আনয়নের জন্য বর্তমান সরকার পুনরায় ২০১০-১১ অর্থ বছরে এ কর্মসূচি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে প্রবর্তিত এ কর্মসূচি সমাজসেবা অধিদফতর সফলভাবে বাস্তবায়ন করছে। এ কর্মসূচির আওতায় ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১৭ লক্ষ জন ভাতাভোগীর জন্য জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে মোট ১০২০ কোটি টাকা বরাদ্দের সংস্থান রাখা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করার পর বিগত ৬ বছরে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা বিতরণে প্রায় শতভাগ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

বাংলাদেশের দশটি মেগা প্রজেক্ট এর বাস্তব রূপ দানে আমাদের প্রিয় জননেত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা অবর্ণনীয়। বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো হলো- পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প; রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন; রামপাল মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট; মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট; ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (মেট্রোরেল); এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ, মহেশখালী, কক্সবাজার; সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর; পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর; পদ্মা রেল সেতু সংযোগ প্রকল্প ও দোহাজারী থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৩১ নাম্বার স্প্যান বসানোর কাজ ইতিমধ্যে মে মাসে শেষ হয়েছে। মূল সেতু এবং নদীশাসন কাজের মোবিলাইজেশন কাজ চলমান রয়েছে। জাজিরা প্রান্তে এপ্রোচ রোডের কাজ ৭৩ শতাংশ, মাওয়া প্রান্তে এপ্রোচ রোডের কাজ ৯০ শতাংশ, সার্ভিস এরিয়া (২) ৯১ শতাংশ, মূল সেতু নির্মাণ কাজের ২৩ শতাংশ অগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে এবং নদীশাসন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ২০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পটির ৩৩ শতাংশ সার্বিক অগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে।

এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পটি রাশিয়ান সরকারের অর্থায়নে ৫ হাজার ৮৭ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িতব্য ৪টি চুক্তির মধ্যে এ প্রকল্পের ১ম ও ২য় চুক্তির কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে, রামপাল মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ অর্থায়নে ১৭ হাজার ৭৭৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) ইন্ডিয়া লিঃ এর যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হচ্ছে। মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট জাপান সরকারের অর্থায়নে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের ওনার্স ইঞ্জিনিয়ার এ্যাপন্টমেন্ট ল্যান্ড হান্ডেড ওভার টু সিপিজিসিবিএল, ইআইএ ক্লিয়ারেন্স এর কাজ ১০০ ভাগ এবং বাউন্ডারি ফেন্সিং এর কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এই করোনা কালীন মহামারীতেও বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক কোন কাজই থেমে নেই।

আমাদের আজকের এই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ সফলভাবে গড়ে তোলার পেছনে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার যে অবদান আত্মত্যাগ রেখে চলেছেন সেটা জাতি কোনদিনই ভুলবে না। সহজ ও নিয়মকানুন শিথিল করে দেয়। যার ফলশ্রুতিতেই রেমিটেন্স ও রিজার্ভের এই সুখবরগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি।

 

লেখক: অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।