বাড়ি ভাড়া বকেয়া থাকায় শিক্ষার্থীদের সবকিছু ভাগাড়ে ফেলে দিলেন বাড়িওয়ালা

অভিযুক্ত বাড়িওয়ালা

করোনাকালীন সময়ে বাড়ি ভাড়া বকেয়া থাকায় ঢাকা কলেজ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত আট শিক্ষার্থীর ব্যবহার্য জিনিসপত্র, বই, সার্টিফিকেটসহ সবকিছু ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছেন বাড়িওয়ালা। শুধু তাই নয়, লোক ডেকে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িতে শিক্ষার্থীদের সকল সামগ্রী তুলে দিয়েছেন তিনি। এমন খবর পেয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকায় ছুটে আসে অমানবিক আচরণের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীরা।

রাজধানীর ধানমন্ডির ভূতের গলির ৪/এ ওয়েস্ট এন্ড স্ট্রীট এর রুবী ভবনের মালিক মুজিবুল হক ওরফে কাঞ্চন মিয়া জিনিসপত্র ফেলে দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি বরং তার সাথে শিক্ষার্থীরা দেখা করতে গেলে খারাপ আচরণ করে বাড়ি থেকে বেরও করে দেন।

ঢাকা কলেজের সম্মান শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সজিব খান জানান, রুবী ভবনের নিচতলায় চার বছর ধরে ভাড়া থাকতেন তারা। মোবাইলে যোগাযোগ করে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে পানি, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল বাবদ পনের হাজার টাকা পরিশোধ করেন তারা। বাড়িওয়ালাও তাদের সকল জিনিসপত্র যথাযথভাবে সংরক্ষিত রয়েছে বলে জানান। কিন্তু এরই মধ্যে বাড়িওয়ালা ফ্লাটের তালা ভেঙে ভেতরের সকল জিনিসপত্র বের করে ফেলে দেন।

বাড়িওয়ালার এমন অমানবিক আচরনে ভুক্তভোগীর তালিকায় রয়েছে চার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীও৷ সবকিছুর সাথে খোয়া গেছে আসন্ন পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন এবং এডমিট কার্ডের মূলকপি। এখন পরীক্ষায় অংশ নেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন এসব শিক্ষার্থী৷

বিষয়টি জানতে বাড়ির মালিক মুজিবুল হক ওরফে কাঞ্চনকে একাধিকবার ফোন করলেও তার মুঠোফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়৷

এই ঘটনায় কলাবাগান থানায় মামলা হয়েছে জানিয়ে নিউমার্কেট জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হাসান বলেন, এটি একটি অমানবিক ঘটনা। শিক্ষার্থীদের সারাজীবনের সঞ্চয় তাদের সার্টিফিকেট সহ যাবতীয় জিনিসপত্র নষ্ট করার অধিকার কারোই নেই। ঘটনার বিষয়ে মামলা হয়েছে৷ আমরা অভিযুক্ত বাড়ির মালিককে ধরতে তাঁর বাসায় অভিযান চালিয়েছি, আসামিকে পাওয়া যায়নি। তাকে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এমন ঘটনায় সবধরনের প্রশাসনিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এমন সংকটময় মুহূর্তে এমন অমানবিক কাজ খুবই নিন্দনীয়। আমি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি যেন সকল ধরণের আইনী সহায়তা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা পান।