যশোরের সেই ছাত্রের ডোপ টেস্টের রিপোর্ট চেয়েছেন হাইকোর্ট

যশোরের কলেজছাত্র ইমরান নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগ করার পর তার ডোপ টেস্টের প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৫ জুলাইয়ের মধ্যে তার চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় আনুষঙ্গিক কাগজপত্র দাখিল করতে যশোরের সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ইমরানের স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন এবং ওই ঘটনায় পুলিশের করা তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর গতকাল রোববার বিচারপতি জেবিএম হাসানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে এক রিটের শুনানি নিয়ে ২৩ জুন স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন এবং ওই ঘটনায় পুলিশের করা তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।

সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, সিভিল সার্জনের প্রতিবেদনে এখন তার কিডনির ফাংশন নরমাল এবং হি ইজ ফিজিক্যালি ওয়েল বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান হোসেনের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এরপর আদালত সেই ছাত্রের ডোপ টেস্টের প্রতিবেদন চেয়েছেন।

ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব জানান, ভিকটিম ইমরানের ডোপ টেস্ট করে তার রিপোর্ট এবং তার চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় আনুষঙ্গিক কাগজপত্র ৫ জুলাইয়ের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করতে যশোরের সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন। ১৮ জুন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার বিচারপতি জেবিএম হাসানের ভার্চুয়াল বেঞ্চে এ রিট পিটিশন দাখিল করেন। আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব, যশোরের পুলিশ সুপার (এসপি), যশোরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি এবং যশোরের সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

কলেজছাত্র ইমরানের অভিযোগ, ৩ জুন সন্ধ্যায় তিনি সলুয়া বাজার এলাকা থেকে এক সঙ্গীসহ বাড়ি ফিরছিলেন। পথে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সাজিয়ালি ফাঁড়ির পুলিশ তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে। এ সময় ভয়ে ইমরান দৌড় দিলে পুলিশ সদস্যরা তাকে ধরে মারধর করেন। পরে ইমরান জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার জ্ঞান ফিরলে একটি ফার্মেসিতে নিজেকে দেখতে পান। এ সময় পুলিশ পকেটে গাঁজা দিয়ে তার বাবার কাছে ফোন করে ২৫ হাজার টাকা দাবি করে। পরে ছয় হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

পরে বৃহস্পতিবার ভোরে ইমরানকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাকে বেসরকারি কুইন্স হসপিটালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে চিকিৎসকরা জানান, তার দুটি কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮ জুন বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় হয়। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি শেখের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ১৫ জুন তদন্ত কমিটি পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত কমিটি ইমরানকে নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পায়নি।