বাংলাদেশে মৃতের হার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইতালির চেয়ে অনেক কম

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসে মৃতের হার কম অনেক কম। অন্যান্য দেশগুলোতে যেখানে করোনায় মৃতের হার ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ, সেখানে ঘন জনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে এই হার ১ দশমিক ৩ শতাংশ।

বিশ্বব্যাপী এই মহামারী পর্যবেক্ষণ করছে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনায় বৈশ্বিক মৃত্যুহার ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) এই হারের কথা জানিয়েছে।

এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যুর হার ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ, ইতালিতে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ, ব্রাজিলে ৬ দশমিক ৫, ফ্রান্সে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ, স্পেনে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ, মেক্সিকোতে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ, বেলজিয়ামে ১৬ দশমিক ২ শতাংশ, জার্মানীতে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, কানাডায় ৮ শতাংশ ও নেদারল্যান্ডে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ।

ওই পরিসংখ্যানে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনায় মৃতের হার ২ দশমিক ৮ শতাংশ ও পাকিস্তানে ২ দশমিক ১ শতাংশ।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. নাসিমা সুলতানা বলেন, সৌভাগ্যক্রমে আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যুর হার বৈশ্বিক হারের তুলনায় অনেক কম। বাংলাদেশে এই হার ১ দশমিক ৩ শতাংশ।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, ব্রাজিল মেক্সিকো ও কানাডার মতো দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা এখনো অনেক ভাল। পাশাপাশি করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়ার হার আনুমানিক ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের প্রায় ৫০ শতাংশ তুলনামূলকভাবে বয়সে নবীন এবং এটাই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকার ও অধিক মাত্রায় সুস্থ্য হওয়ার অন্যতম কারণ। এ কারণেই করোনা ভাইরাসে মৃতের হার এখানে কম।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, হটস্পট সনাক্ত, প্রবেশ দ্বারগুলোতে ইন্টেসিফাই স্ক্রিনিং বসানো ও ব্যাপক জনসচেতনামূলক প্রচারণাসহ সরকারের বিভিন্ন কার্যকরী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই বাংলাদেশে করোনায় মৃতের হার অনেক কম।

তিনি বলেন, অফিস ও গণপরিবহণ পুনরায় চালু করে দেয়ার পর করোনা মোকাবেলায় সাধারণ মানুষকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ব্যাপক প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি জনগণ যেন যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

আইইডিসিআর-এর উপদেষ্টা ডা. মুস্তাক হোসেন বলেন, বাংলাদেশ অতীতে যক্ষ্মা, ম্যারেরিয়া, ডেঙ্গু এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুকে সফলভাবে মোকাবেলা করেছে। এ সব রোগ মোকাবেলার দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় আমরা অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। তিনি বলেন, আমি মনে করি, দেশের পূর্ব অভিজ্ঞতা করোনা মহামারী মোকাবেলাকে সহজ করেছে। ফলে, এখন অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় এখানে মৃতের হার অনেক কম।

সূত্র: বাসস